কেন আলোচনায় নেই একতরফা নির্বাচনের প্রধান সহযোগী রওশন এরশাদ?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পিএম
রওশন এরশাদ কখন তিনি জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক আবার কখন তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে হয়েছেন আলোচিত। বিগত দেড় দশকের আওয়ামী দুঃশাসনের অন্যতম প্রধান সহযোগী রওশন এরশাদ।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারে পতন হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, তার সব সহযোগীরা মামলা-গ্রেফতারে বিপাকে পড়েন। কিন্তু এক সময় ফার্স্ট লেডি খ্যাতি পাওয়া রওশন এরশাদ আলোচনার বাইরে এখনো রয়েছেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে শেখ হাসিনার অধীনে আয়োজিত এই নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি-জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। সেই সময়ে এক তরফা নির্বাচন আয়োজনে আওয়ামী লীগের দরকার ছিল একটি ডামি বিরোধী দল।
ফলে জাতীয় পার্টিকেই এই দ্বায়িত্ব দিতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু, এতে রাজি হননি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। সাজানো এই নির্বাচনে অংশ নিতে কোনোভাবেই এইচ এম এরশাদকে রাজি করাতে না পেরে, এক পর্যায়ে তাকে বাসা থেকে তুলে সিএমএইচে নিয়ে যায় র্যাব।
এরশাদ সিএমএইচে বন্দী থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের চাহিদামতো সাজানো সেই নির্বাচনে তার স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি। একটি পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে মাত্র ৩৪টি আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহপালিত বিরোধী দল হয়ে যায় জাতীয় পার্টি।
দলের প্রধান এরাশাদের পরবর্তে পুরষ্কার হিসাবে বিরোধীদলীয় নেত্রীর আসনে বসেন রওশন এরশাদ। শুধু নির্বাচনে অংশ নিয়ে সমর্থন দেওয়াই নয়, বিরোধী দল হিসেবে সংসদে জনগণের পক্ষে কথা বলার বিপরীতে উল্টো সরকারের তোষামোদে লেগে পড়ে রওশনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল।
বিরোধী দলে থেকে মন্ত্রিসভায়ও ভাগ বসায় তারা। বিনিময়ে নিজেদের আখের গুঁছালেও ধীরে ধীরে দেশ থেকে বিলীন হতে থাকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার। ১০ম ও একাদশ জাতীয় সংসদে ফ্যাসিবাদের পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা রাখা রওশন এরশাদ অবশ্য জাতীয় পার্টি নিয়ে দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বের জেরে অংশই নেননি সবশেষ অনুষ্ঠিত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
এ কারণে সম্প্রতি আলোচনার বাইরে রয়েছেন তিনি। যদিও দেশবাসী মনে করেন, বাংলাদেশের স্বৈরাচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অন্যতম শীর্ষ কাণ্ডারি তিনি। এজন্য বিচারের আওতায় আনা উচিত এক সময় ফার্স্ট লেডি খ্যাতি পাওয়া রওশন এরশাদ।