নেতৃত্বশূন্য হয়ে গুজবনির্ভর হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলটির দপ্তর থেকে শুরু করে সবই এখন শূন্য। অসংখ্য নেতা হামলা-মামলার শিকার। দলের সভাপতিসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অধিকাংশ নেতাকর্মী। সুনির্দিষ্ট নেতৃত্ব না থাকায় নেতাকর্মীরা চলছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘গুজবে’ ভর করে। ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর আর মিডিয়ার সামনে আসেননি দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে না আসলেও তার ফোনালাপ ফাঁস নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। দেশেও নেতাদের নামে বক্তব্য, বিবৃতি ও প্রেসনোট আসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু এসবের সত্যতা নিশ্চিত করার মতো মিলছে না কোনো মাধ্যম। নেতাদের কারও কাছেই কোনো মাধ্যমে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভিডিওবার্তা দিয়েছেন কয়েকবার। কিন্তু তার দলীয় পদ নেই। তার কথাবার্তায়ও গরমিল। যে কারণে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার চেয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বেশি।
সব মিলিয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ‘গুজবনির্ভর’ হচ্ছে দলটির নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা পাচ্ছে, তাই শেয়ার করছে। এমনকি এখনো ‘৭ মিনিটে সব শেষ করে দেবে’ মনোভাব নেতাকর্মীদের মধ্যে।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিলে ৯ আগস্ট সেই সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোষ্ট করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আহ্বায়ক এবং সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সদস্যসচিব করে আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ১৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি বার্তা প্রচার হয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের নামে। ঐ ফেসবুক পোষ্টে নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে সাহস যোগান নানক। যেগুলোর কোনটারই সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
১৩ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। বেলজিয়ামে অবস্থানরত নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শেখ হাসিনা সেই ফোনালাপে বলেন যেভাবে ক্ষমতা ছাড়া দরকার সেভাবে সে ছাড়েনি। এর আগে তানভীর নামে এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।’
এছাড়া পুরনো ছবি ও ভিডিও দিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া, ‘আওয়ামী লীগের নির্দেশনা’ সম্বলিত ভুয়া প্রেস রিলিজ শেয়ার দেওয়া, সরকার পতনের জন্য- ‘মিষ্টির দোকান রেডি রাখার ঘোষনা দেওয়া এজাতীয় স্ট্যাটাস দিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। যে কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে দিশেহারা অবস্থা তৈরী হয়েছে। এখন তাদের করনীয় নিয়ে হতাশায় পড়েছে তৃনমূলের কর্মীরা।