যেমন হবে নতুন পুলিশ, জনআস্থায় ফিরতে যা আছে প্রস্তাবে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৮ পিএম
স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনসহ পুলিশ সংস্কারে একগুচ্ছ প্রস্তাব তৈরি করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীটির সদর দপ্তর। এতে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পুলিশের সব সদস্যের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও তদারকি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রাথমিক খসড়ায় মানবাধিকার সুরক্ষা, পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা বাড়ানো সংস্কারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুসরণীয় নীতি গ্রহণ, কর্মসময় ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ সহ বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া পিআরবিসহ বিভিন্ন আইন ও বিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন বিভিন্ন ইউনিটের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোসহ রয়েছে অনেক নতুন প্রস্তাব। সর্বোপরি ২০০৭ সালের প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের আলোকে পুলিশের সংস্কার চান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১১ সেপ্টেম্বর ৬টি কমিশন গঠন করে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনকে। সংস্কারের অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ পরিচালিত হয় আইন ও বিধির আলোকে। এই আইন অনেক ব্যাপক। আমি নিজেও অনেক আইন জানি। আর যেগুলো আছে সেগুলো সংগ্রহ করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবেও আইনগুলো নিয়ে পড়াশোনা করছি।
তিনি আরও জানান, ব্রিটিশ আমলের আইনের কিছু ধ্যান-ধারণা বাদ দিয়ে কীভাবে জনবান্ধব পুলিশ হতে পারে, সেদিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। জুলাই-আগস্টে পুলিশের যে ভূমিকা দেখা গেছে, ভবিষ্যতে যাতে সেরকম আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করা লক্ষ্যে কাজ চলছে। চেষ্টা করছি, সংস্কারের মাধ্যমে যাতে জনকল্যাণমুখী হয় পুলিশ।
সম্প্রতি সচিব কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সেটা দাখিল ও বাস্তবায়নের জন্য ম্যাচিং অর্ডার দেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রশাসন-১ শাখা থেকে জরুরি ভিত্তিতে নির্ধারিত ছকে আইজিপিকে তথ্য পাঠাতে নির্দেশ নেওয়া হয়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি কাজী জিয়া উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রস্তাবিত পুলিশ সংস্কার পরিকল্পনা সম্পর্কে ৮ পাতার একটি লিখিত প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সংস্কার পরিকল্পনা একটি চলমান কার্যক্রম এবং এ সংক্রান্তে ভবিষ্যতে অধিকার আলোচনা পর্যালোচনার সুযোগ রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের প্রস্তাবিত পুলিশ সংস্কারের লক্ষ্যে জনপ্রত্যাশা ও পুলিশ সংস্কার: পরিবর্তনের পথনকশা শীর্ষক পরিকল্পনায় আইনি কাঠামো সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তৈরি করা হয়। এতে সংস্কার বিষয়ে বলা হয়েছে—সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা, পুলিশ অ্যাক্ট ১৮৬১ ও পুলিশে রেগুলেশন অব বেঙ্গল-এর প্রয়োজনীয় সংশোধন।
এটি বাস্তবায়ন করা গেলে একটি সুপ্রশিক্ষিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে পুলিশ দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে সমসাময়িক বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড রোধের মাধ্যমে জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনমনে স্বস্তি আনতে সক্ষম হবে।