×

ভিডিও

১৯৭৫ সালের পর ২০২৪ আওয়ামী লীগের চরম সংকটকাল

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৯ পিএম

   

গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চরম সংকটে পড়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। বিশ্লেষকরা বলছেন ‘পতন ও সংকটের ধরন ভিন্ন’ হলেও এবারের সংকট দলটিকে পঁচাত্তরের ১৫ই অগাস্টের মতো ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

গত জুলাই এবং অগাস্টে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর দলটির অন্য নেতাদের অনেকেই আত্মগোপন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

দলটির দুয়েকজন নেতার নামে বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটি বিবৃতি গণমাধ্যমে আসলেও দলের নেতৃত্ব কিংবা কার্যক্রম কোনোটাই এখন দৃশ্যমান নয়। এমনকি ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও আন্দোলনকারীদের হামলার তছনছ হয়ে গেছে। 

ঊনপঞ্চাশ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পরও ভয়াবহ এক সংকটকালের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটিকে।

ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলছেন ১৯৭৫ ও ২০২৪- উভয় ঘটনাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

উনিশশো পঁচাত্তরের ১৫ই অগাস্টে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে যখন আক্রমণ হয়, তখন কোনো ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই পুরো বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সপরিবারে মি. রহমানকে হত্যা করে হত্যাকারীরা। এ ঘটনায় কার্যত তছনছ হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। এর জের ধরে পরে তখন সারাদেশে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দলটি।

হত্যাকাণ্ডের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত সেনাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগেরই একজন সিনিয়র নেতা এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন।

এরপর আওয়ামী লীগের যারা মোশতাক সরকারকে সমর্থন করেননি তারা অনেকে আত্মগোপনে যান। অনেক নেতা পরবর্তীতে আটক হয়ে দীর্ঘসময় ধরে কারাভোগ করেন। অনেকে ভারতে চলে যান। 

সে বছর ১৫ই অগাস্টের আগে শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল পদ্ধতি প্রবর্তন করেছিলেন। পরে ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধনের সুযোগ পেলে তখন আবার আওয়ামী লীগ নামেই দলটি নিবন্ধিত হয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলো। এরপর ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (মালেক) ৩৯টি এবং আওয়ামী লীগ (মিজান) দুটি আসন লাভ করে। আওয়ামী লীগের একটি অংশ আবার বাকশালকেও সক্রিয় করে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন“শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী এবং অন্য বাহিনীর ওপর নির্ভর করে দেশ শাসন করেছিলেন। দলের সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছিলেন। ফলে দল হয়েছিলো মুজিব নির্ভর। এ কারণে ১৫ই অগাস্টের পর দলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি,”  । 

তিনি বলেছেন, ১৫ই অগাস্ট পরবর্তী সরকার পরবর্তীকালে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত হবার সুযোগ দিয়েছিলো। এরপর দল টেকানোর জন্য দলের বিবদমান নেতারাই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাই দলের সভাপতি পদে আছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ব্যাপক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পাঁচই অগাস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরপরই দলের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান এবং দলটির কোনো স্তরের কোনো নেতাকেই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। শেখ হাসিনাসহ দলের সব নেতার বিরুদ্ধেই বহু মামলা দায়ের হয়েছে। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ওবায়দুল কাদের এবং জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ নেতাদের বড় একটি অংশ ভারতে চলে গেছেন।

এছাড়া দল এবং শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যাখ্যা করে একাধিকবার ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এমন অবস্থায় গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে চরম নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দিয়েছে। এতে সাংগঠনিকভাবে দলটি রীতিমত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির তৃণমূলের নেতারা।


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App