মুখে সমাজতন্ত্রের বুলি আওড়িয়ে মেনন গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বামধারার রাজনীতি অন্যতম অগ্রজ। সমাজতন্ত্র যেখানে সমতার কথা বলে। খেটে খাওয়া বলে সেখানে মেনন হেটেছেন উল্টোপথে। সারাজীবন মুখে সাম্যের কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছেন আমজনতার কোটি কোটি টাকা।
আওয়ামী সরকারের আমলে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক তার দল। রমনা, মতিঝিল ও সবুজবাগ থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ছিলেন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী এবং বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিগত ১৬ বছরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের একান্ত দোসর ও সহযোগী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিমান ক্রয় দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়ে দেশে এবং বিদেশে ওই সম্পদ গড়েছেন।
অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাশেদ খান মেননের নামে লন্ডনে ২৫টি বাড়ি, কানাডায় স্ত্রীর নামে ৫টি বাড়ি ও আমেরিকায় ২টি বাড়িসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার। অন্যদিকে ঢাকার গুলশানে ২৫ কোটি টাকার ৪টি ফ্ল্যাট ও বানানীতে ৯ কোটি টাকার ২টি ফ্ল্যাটসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে হাজার বিঘা জমির মালিকানা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া নিজ ও আত্মীয় স্বজনের নামে দেড় হাজার কোটি টাকা ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন বলে জানা গেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের বেশকিছু দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,মেনন ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননেছা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি হিসেবে অবৈধভাবে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালনকালে তিনি ১৮২ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ১৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরর অবৈধভাবে পদোন্নতি দিয়ে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এমনকি ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে বিভিন্ন খাতে ভুয়া ভাউচারে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মেনন চক্র। অন্যদিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকেও ৮ বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
আর রাশেদ খান মেনন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালে অবৈধভাবে চাকুরিতে নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্য, স্বর্ণ চোরাচালান, বিমান ক্রয় অবৈধভাবে বরাদ্দ প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়ম করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন লন্ডনে ২৫টি বাড়ি ক্রয় করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ৮ হাজার কোটি টাকা। কানাডায় তার স্ত্রীর নামে ৫টি বাড়ি ক্রয় করেছেন। যার মূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা এবং আমেরিকায় ২টি বাড়ি ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা হয়েছে।