ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারকে অনুদানের কথা বলে অভিনব প্রতারণা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০২ পিএম
ভাইয়ের ছবি যেনো এখন কেবলই সৃতি। ভাই হারানো শোক এখনো কাটেনি বোন রেবা বেগমের। সেই শোক না কাটতেই এক প্রতারকের খপ্পরে পড়ে এখন দিশেহারা রেবা বেগমের পরিবার। বিকাশে অনুদানের টাকা দেয়ার কথা বলে এক প্রতারক হাতিয়ে নিয়েছে টাকা।
মো. আলমগীর মোল্লাহ, থাকতেন পশ্চিম মেরুল বাড্ডা, করতেন চায়েন দোকান এমনকি মাঝে মধ্যে বাবুর্চির কাজও। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর বিজয় মিছিল নিয়ে নিজ এলাকা উত্তর মেরুল বাড্ডা থানার পাশেই আনন্দমিছিল করছিলেন, সে সময় পুলিশের আকস্মিক গুলিতে গুরুতর আহত হন আলম মোল্লাহ। ৮ আগস্ট রাতে শ্যামলী সিটি কেয়ার হসপিটালে মৃত্যু হয় তার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেন আন্দোলনে আহতদের এক লক্ষ ও নিহতদের পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেয়া হবে। আর তার সুবিধা নিয়ে কিছু অসাধু চক্র শহিদের পরিবারের সাথে করে যাচ্ছে প্রতারণা।
৫ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সরকারি কর্মকর্তা সেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ হওয়া মো. আলমগীর মোল্লাহ পরিবারের এক সদস্যকে ফোন করে অনুদানের টাকা দেয়া হবে বলে জানান। টাকা দেয়ার কথা বলে সুকৌশলে বিকাশ নাম্বার ও ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার নিয়ে নেয়।
বিকাশ নাম্বারে ২০ হাজার টাকার একটি ম্যাসেজ পাঠায় চক্রটি। এরপর একটি এসএমএস দিয়ে সুকৌশলে ওটিপি নাম্বার নিয়ে নেয়। এরপর বিকাশে থাকা চার হাজার টাকা উঠিয়ে নেয় সেই প্রতারক। ভুয়া এস এম এস-এ আসা বিশ হাজার টাকাও উধাও হয়ে যায়।
প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এক দিকে পরিবারের সদস্য হারানোর শোক অন্যদিকে প্রতারণা, এখন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বর্তমানে দিশেহারা এই পরিবারটি।
শহীদ আলমগীর মোল্লার পরিবারে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। বাবাকে হসপিটালে আনা নেয়ার সময় অফিসে না যাওয়াই বড় ছেলের চাকরিও চলে যায়। বর্তমানে পরিবারটি অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছে।
এই প্রতারণা শুধু আলমগীরের পরিবারের সাথেই হয়েছে এমন নয়, এরকম ঘটনা মাঝেমাঝেই ঘটিয়ে যাচ্ছে প্রতারক চক্রটি। এখন শহীদ আলমগীরের পরিবারের দাবি, আমাদের মত যাতে কেউ এমন প্রতারণার স্বীকার না হয় তাই তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।