সেদিন বক্তব্যে যা বলেছিলেন রাষ্ট্রপতি, সত্যি কি তিনি মিথ্যা বলেছেন?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০০ পিএম
গেল ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে যাওয়ার পর জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। যেখানে তিনি স্পষ্ট বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তা তিনি গ্রহণ করেছেন।
ভাষণে রাষ্ট্রপতি সংসদ বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বঙ্গ ভবনে তিন বাহিনীর প্রধান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কের সঙ্গে আলোচনা হয়। আলোচনা একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন রাষ্ট্রপতি ভাষণে এ কথা বললেও পদত্যাগ পত্রটি জনসম্মুখে না আসায় অনেকেই এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
পদত্যাগ নিয়ে এখনও কাজ করছেন ধোঁয়াশা। কারণ কিছুদিন আগে ফাঁস হওয়া ফোন কলে তিনি নেতাকর্মীদের জানিয়েছেন যে, তিনি পদত্যাগ করেননি। যে কোনো সময় চট করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়বেন। এর পর মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে সাবেক একনায়ক হাসিনা সত্যিই কি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করে থাকলে তার পদত্যাগপত্রই বা কার কাছে?
এরই মাঝে ১৯ অক্টোবর দৈনিক মানব জমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী তার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে লেখেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই বলে তিনি অস্বীকার করেছেন। তার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।
তবে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানদের সামনে রেখে বলেছিলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।
রাষ্ট্রপ্রধানের এই দ্বিমুখী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
রাষ্ট্রপতির এমন দ্বিমুখী বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাও রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছিল স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা। পদত্যাগপত্র নিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাত্র-জনতা গণভবনের কাছাকাছি চলে আসলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় খুনি হাসিনা।
আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শক্তির উত্থান ও পুনর্বাসন ঠেকাতে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।
সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন, হাসিনার সঙ্গে রাষ্ট্রপতিরও পালানো উচিত ছিল।
সমন্বয়করা বলছেন, একজন রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি দুরকম কথা বলতে পারেন না। তাই তার পদত্যাগের দাবি জানান তারা।