এ যাত্রায় কি তাহলে টিকে গেলেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুউদ্দিনকে অপসারণের দাবি ওঠার পর থেকে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের চাপ থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মতানৈক্যে আপাতত বঙ্গভবন ছাড়তে হচ্ছে না। যদিও তাকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এখনো প্রশমন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি পদে মোঃ সাহাবুদ্দিন কত সময় টিকতে পারবেন, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
মোঃ সাহাবুদ্দিনকে ‘পদত্যাগে বাধ্য করা বা অপসারণের জন্য নতুন পদক্ষেপে’ বিএনপি রাখঢাক না রেখেই তার অবস্থান জানিয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদে থাকার অধিকার হারিয়েছে মত দিলেও তাঁর পদত্যাগ প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীর জোরালো দাবি নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করতে অবশ্যই সংসদ লাগবে। দ্বাদশ সংসদ বিলুপ্তির কারণে সেটি সম্ভব নয়। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণে ভিন্ন কোনো পদ্ধতির বিষয়ে নির্দেশনা বিদ্যমান সংবিধানে নেই।
বিএনপির একটি প্রতিনিধির দল বুধবার ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানান এই মুহূর্তে তারা রাষ্ট্রপতির অপসারণ চান না। নতুন সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টির বিপক্ষে’ দলীয় অবস্থানের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানায় বিএনপি। তবে শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিএনপির অবস্থান প্রত্যাখ্যান করে পাঁচ দফা দাবি পুর্নব্যক্ত করা হয়।
সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে একটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।তিনি দেশে ফেরার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে আবারো আলোচনা হতে পারে সেখান থেকে আসতে পারে নতুন কোন সিদ্ধান্ত।
ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা অক্টোবরের শুরু থেকেই রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবি তুলে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার ‘পদত্যাগের’ বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতির এক বক্তব্য সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার মন্তব্যকে ঘিরে ওই দাবি প্রবল হয়। তবে প্রশ্ন উঠেছে, সংসদ যেহেতু কার্যকর নেই, বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোতে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের কোনো সুযোগ আছে কি না।
রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় যদি পদত্যাগ করেন, সেক্ষেত্রে কার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্বাচন করা হবে, সেটিও প্রশ্ন। এক্ষেত্রে সাংবিধানিক সংকট দেখছেন কয়েকজন আইনজীবী। কারণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন সংসদ সদস্যরা। রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণের ক্ষমতাও জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগপত্র দেবেন স্পিকারের উদ্দেশে। নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত স্পিকার এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন। স্পিকার পদত্যাগ করায় এটিও সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে কি এ যাত্রায় টিকে যাচ্ছে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, এমন প্রশ্ন এখন অনেকের।