চীনে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিন্ডারগার্টেন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার নিম্ন জন্মহার ও তার জেরে শিশুদের সংখ্যা কমতে থাকায় একের পর এক কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চীনে। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া সবশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে চীনজুড়ে যেখানে ২ লাখ ৮৯ হাজার ২শটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ছিল, পরের বছর ২০২৩ সালে তা হ্রাস পেয়ে নেমে এসেছে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৪শটিতে। মাত্র এক বছরে দেশটিতে ১৪ হাজার ৮শটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে।
শতকরা হিসেবে এক বছরে চীনে ১ দশমিক ২ শতাংশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। আর এই সময়সীমায় চীনে কিন্ডারগার্টেনগামী শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।গত কয়েক বছর ধরেই চীনে জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। তবে সময় যত গড়াচ্ছে, সংকট দূর হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি ঘনীভূত হচ্ছে। ২০২৩ সালে চীনে জন্ম নিয়েছে মাত্র ৯০ লাখ শিশু। ১৯৪৯ সালের পর এই প্রথম এক বছরে এত কম সংখ্যক শিশুর জন্ম দেখেছে দেশটি।
দেশটির জনসংখ্যা গবেষকদের মতে, এই মুহূর্তে চীনের জন্মহার হওয়া উচিত ২ দশমিক ১; কিন্তু গত বছর জন্মহার ছিল ১-এর চেয়েও কম। এদিকে জন্মহার কমে যাওয়ায় একদিকে যেমন শিশুদের সংখ্যা কমছে, তেমনি অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বয়স্কদের সংখ্যা। যেসব কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে, সেসবের মধ্যে অনেকগুলোকে ইতোমধ্যে বৃদ্ধ নিবাসে রূপান্তর করা হয়েছে।
চীনের জনসংখ্যাবিদ হে ইয়াফু বলেন, “শিশুদের সংখ্যা কমতে থাকলে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে একের পর এক স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়া কোনো ইতিবাচক ব্যাপার নয়।
চীনে জন্মহার কমে যাওয়ার একটি বড় কারণ প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ-তরুণীদের বিয়ে না করা এবং একা থাকার প্রবণতা বাড়তে থাকা। আবার তরুণ-তরুণীদের একা থাকার প্রবণতা বাড়তে থাকার প্রধান কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে ধীরগতি এবং বাড়তে থাকা বেকারত্ব। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে চীনে বিয়ে করেছেন ৩০ লাখ ৪৩ হাজার যুগল। ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসের থেকে এই সংখ্যা ৪ লাখ ৯৮ হাজার কম।
এক সময় চীন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। এমনকি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দেশটিতে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সরকার এক সন্তান নীতিও গ্রহণ করেছিল। ফলে ২০১০ সাল থেকে দেশটির জন্মাহার হ্রাস পেতে শুরু করে। এই সংকট কাটাতে ২০১৬ সালে এক সন্তান নীতি বাতিল করে চীন সরকার।