যেভাবে হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান হলেন নাঈম কাসেম

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৬ পিএম
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ’র নতুন প্রধান হিসেবে শেখ নাঈম কাসেমকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি ইসরাইলি হামলায় নিহত সাবেকপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহর উত্তরসূরি হলেন। হাসান নাসরুল্লাহ নিহতের এক মাস পর নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা করল হিজবুল্লাহ। এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, হিজবুল্লাহ’র শুরা কাউন্সিল শেখ নাঈম কাসেমকে গোষ্ঠীটির সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত করতে সম্মত হয়েছে।
ইসরাইলের সঙ্গে ২০০৬ সালে যুদ্ধের পর আত্মগোপনে চলে যান হাসান নাসরুল্লাহ। সেসময় থেকে কাসেম হিজবুল্লাহ’র সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন যিনি জনসমক্ষে ছিলেন। ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরাইলি বিমান হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর থেকে কাসেম তিনবার টেলিভিশনে ভাষণ দেন।
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে জড়িত আছেন নাঈম কাসেম। ১৯৯১ সালে কাসেমকে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আব্বাস আল-মুসাভি উপ-প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন। এর পরের বছর আব্বাস আল-মুসাভি ইসরাইলের হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন।
হাসান নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর প্রধান হওয়ার পরও কাসেম এতদিন গোষ্ঠীটির উপ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি গোষ্ঠীটির মুখপাত্রও।
ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন তিনি প্রায়ই বিদেশি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হতেন। হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর পরও তিনিই প্রথম টেলিভিশনে ভাষণ দেন।
১৯৫৩ সালে নাঈমের জন্ম হয় বৈরুতে। তাঁর পরিবারটি লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে এখানে এসেছিল। লেবাননের রাজনৈতিক দল আমল মুভমেন্টে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নাঈমের রাজনৈতিক জীবন শুরু। তবে ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের সময় তিনি সেই দল থেকে সরে দাঁড়ান। হিজবুল্লাহর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নাঈম কাশেম। সংগঠনটি গঠনের সময় এ–সংক্রান্ত বৈঠকগুলোতে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড করর্পসের সমর্থনে হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত হয়।
কাসেম সাদা পাগড়ি পরার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তার পূর্বসূরি নাসরুল্লাহ এবং সাফিউদ্দীন হাশেম কালো পাগড়ি পরতেন যা মহানবী (সা.) এর বংশধর হিসেবে তাদের বিশেষ মর্যাদা দিতো।
অবশ্য নাসরুল্লাহ নিহতের পর হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য নতুন নেতা হিসেবে আলোচনায় আসেন হাশেম সাফিউদ্দীন। নির্বাহী কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক বিষয়গুলো তত্ত্বাবধান করতেন হাশেম। তিনি জিহাদ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন, যা প্রতিরোধ যোদ্ধা দলটির সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে তিন সপ্তাহ আগে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলিতে ইসরাইলের এক বিমান হামলায় নিহত হন তিনি। গত সপ্তাহে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ।