ইরানের যে খবরে মাথা খারাপ পশ্চিমা বিশ্বের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পিএম
পরমাণু বোমা তৈরির পথে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ইরান। ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মাঝেই প্রকাশ্যে এল এমনই বিস্ফোরক তথ্য। পশ্চিমা বিশ্বের দাবি পরমাণু শক্তিধর হয়ে উঠতে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে প্রস্তুতি চালাচ্ছে ইরান। এবার রাষ্ট্রসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ এর প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হল নির্ধারিত সীমা ছাড়িয়ে ইউরেনিয়ামের মজুত ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে রাশিয়ার এই বন্ধু রাষ্ট্র। যা ইজরায়েল তো বটেই গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরইমধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ উচ্চ মাত্রার ইউরেনিয়াম মজুত করে ফেলেছে তেহরান। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে হামাস-ইসরাইল সংঘাত। আর সম্প্রতি সহস্রাধিক দিন অতিক্রম করলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। দুটি যুদ্ধেই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছে মিত্র দেশগুলো। মধ্যপ্রাচ্য আর ইউরোপে চলমান এসব সংঘাতের মধ্যেই আলোচনায় পারমাণবিক বোমা।
১৯ নভেম্বর আন্তর্জাতিক পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ'র প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামের মজুত ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে ইরান। পরমাণু অস্ত্র নির্মাণে প্রয়োজন হয় ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের যেটির পরিমাণ প্রায় ১৮৫ কেজি। ঐ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এরইমধ্যে ৬০ শতাংশ উচ্চ মাত্রার ইউরেনিয়াম মজুত করে ফেলেছে তেহরান। যা, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়েও ৩২ গুণ বেশি।
ইরানের পরমাণু সক্ষমতায় লাগাম টানতে ২০১৫ সালে দেশটির সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানি। তবে, বিভিন্ন দেশের সংঘাতের জেরে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখেনি চুক্তিটি।
২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই গোপনে পারমাণবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তেহরান, এমনটাই দাবি আইএইএ'র।
বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান যদি কোনভাবে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয় সেক্ষেত্রে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে ইসরাইলে ইরানের হামলার ঘটনার পর থেকে দেশটির পরমাণু সক্ষমতার মাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমা দেশগুলো।
গত সপ্তাহেই ইরান সফর করেছেন আইএইএ এর প্রধান রাফায়েল গ্রসি। এরপরই তেহরানের ইউরেনিয়াম সক্ষমতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। এছাড়া, অক্টোবরে তেল আবিবে তেহরানের হামলার প্রায় এক মাস পর পরমাণু মজুতের বিষয়ে সতর্ক করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানও। ইউরোপের এই তিন দেশের হস্তক্ষেপ কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলার কথা জানিয়েছে দেশটি।