মেডিকেল রিপোর্টে ভয়াবহ জালিয়াতি, টাকা না দিলে ফিটদেরকে দেখানো হচ্ছে আনফিট

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম
মো. আজিজুল ইসলাম, বাড়ি ঢাকার দোহার উপজেলায়, বিদেশে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর একটি মিরপুর কাফরুল থানাধীন ইবরাহিমপুরে অবস্থিত স্মার্ট মেডিকেল সেন্টারে যান। কিন্তু সেখানেই ঘটে বিপত্তি। মেডিকেল রিপোর্টে তাকে আনফিট দেখিয়ে ‘ভুল রিপোর্ট’ দেওয়া হয়। বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয় আজিজুলের।
প্রথমে রাজধানীর শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়কের ইয়াদান মেডিকেলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালে সেখানে ফিট হয়। পরে দুই মাস অতিবাহিত হলে পুনরায় মেডিক্যাল করা হয় কাফরুলের ইবরাহীমপুর স্মার্ট মেডিক্যাল সেন্টারে। সেখানে বুকের X-Ray করানো হলে আজিজুলকে আনফিট দেখিয়ে অনলাইনে আপলোড করা হয় রিপোর্ট। পরে সন্দেহ হলে মহাখালী আইসিডিডিআরবিতে নতুন করে বুকের এক্স-রে পরীক্ষা করা হলে সেখানে ফিট দেখানো হয়।
আজিজুলের অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয়ে জানতে স্মার্ট মেডিক্যাল এর পরিচালকের সাথে কথা হয়। তিনি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে উলটো আইসিডিডিআরবির উপর দোষ চাপালেন। এছাড়া তদের কোনো ধরনের মেডিক্যালের ছবি ও তাদের সাক্ষাতকার নিতেও কঠোরভাবে নিষেধ করেন হসপিটালের এমডি।
এছাড়া তাদের এক্স-রে তে ক্যালসিফিকেশন একটি সমস্যা দেখা দেয় অর্থাৎ ক্যালসিফিকেশন, শরীরের অভ্যন্তরে টিস্যু বা অঙ্গগুলিতে ক্যালসিয়াম জমা হওয়াকে বোঝায় যার কারনে বিদেশগামীকে আনফিট দেখানো হয়।
এই বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করতে যোগাযোগ করা হয় আইসিডিডিআরবির এক্স-রে সিনিয়র অফিসারের সাথে। তিনি স্মার্ট মেডিক্যালের বিষয়টিকে হাস্যকর মনে করেন এবং আইসিডিডিআরবির এক্সরে রিপোর্ট কখনোই ভুল হয়নি এবং নির্ভুল বলে দাবি করেন।
ভুক্তভোগী আজিজুল বলেন ফিট থাকার পরেও তাদের সাথে টাকার কন্ট্রাকের মিল না হওয়াই তাকে আনফিট দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী ভিসায় বিদেশে যেতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে গিয়ে টাকার কাছে হেরে যায় বিদেশগামী অনেক মানুষের স্বপ্ন। কিন্তু কিছু কিছু হাসপাতালের গাফলতিতে ‘ভুল’ রিপোর্টের কারণে বিদেশযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে অনেকের।
নিয়মানুসারে মেডিকেল টেস্টে এইচআইভি, খুব বেশি চর্মরোগ, জন্ডিস, হার্টের সমস্যা এবং শ্বাসকষ্ট এসব রোগের লক্ষণ থাকলে বিদেশ গমনেচ্ছুদের আনফিট দেখানো হয়। কিন্তু ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শরীরে এসব রোগ না থাকলেও ইচ্ছা করে ভুল রিপোর্ট দিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে মেডিকেল সেন্টারগুলো। এই ধরণের মেডিক্যালের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিয়ে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষের।