তাহলে কী এবার শেষ হতে যাচ্ছে বাশার আল-আসাদ যুগের?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ এএম
এক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধ আর পদত্যাগে ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপ থাকার পরও ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এবার সেই দূর্গে বড়সড় আঘাত হেনেছে বিদ্রোহী বাহিনী। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ শাসিত সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী। শহরটি থেকে ইতোমধ্যে পিছু হটেছে সরকারি বাহিনী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, বিদ্রোহীরা শহরের বেশির ভাগ এলাকায় ঢুকে গেছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটি সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের বড় পদক্ষেপ। এসওএইচআর সিরিয়ার কিছু নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করে। তারা জানিয়েছে, সিরিয়া ও রাশিয়ার বিমানগুলো শুক্রবার ওই এলাকায় অন্তত ২৩বার বিমান হামলা চালিয়েছে।
এসওএইচআর বলছে, গত বুধবার থেকে শুরু সংঘাতে তিন শতাধিক নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২০ জন বেসামরিক রয়েছে। রাশিয়া দাবি করেছে, রুশ বিমানবাহিনীর সহায়তায় সিরিয়ান বাহিনী ৩০০ বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে। ২০১৬ সালে বিদ্রোহীদের আলেপ্পো থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারি বাহিনী। এরপর থেকে এটিই বিদ্রোহীদের বড় লড়াই।
ইসলামপন্থী কয়েকটি গ্রুপ তাদের নিজস্ব চ্যানেলে পোস্ট করা ভিডিও থেকে শহরের ভেতরে গাড়িতে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দেখা যায় বলে জানিয়েছে অনেকে। ২০১১ সালে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ দমনে সরকারি বাহিনীর অভিযানের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
জিহাদিসহ যে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আসাদ সরকারের বিরোধিতা করেছিল তারা দেশটির বিভিন্ন এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। সিরিয়ার সরকার পরবর্তী সময়ে রাশিয়া ও অন্য সহযোগীদের সহায়তায় দেশটির অধিকাংশ এলাকা পুনর্দখল করে নেয়। তবে দেশটির ইদলিব এখনো বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটি। এর বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে এইচটিএস। তবে তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহীদের একাংশ ও তুর্কি বাহিনীও সেখানে অবস্থান করছে।
ইরান সমর্থিত লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ২০১২ সাল থেকেই আসাদের সেনাবাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে, ২০১৫ সালে রাশিয়া সিরিয়ার সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি সামরিক সহায়তা প্রদান শুরু করে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সিরিয়ায় রুশ বিমানবাহিনী এবং স্থলসেনা মোতায়েন করেন। এটা আসাদের শাসনকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করে।
জাতিসংঘের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক দশকের এই গৃহযুদ্ধে প্রায় ৩ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সিরিয়ার সংঘাত এখনো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মানবিক সংকট হিসেবে রয়ে গেছে।