লালমনিরহাটে বিমান ঘাঁটির গুঞ্জনে দিশেহারা ভারত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ বিমান ঘাঁটি হতে যাচ্ছে লালমনিরহাটে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবর ছড়িয়ে পরলে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয় জনমনে। সবচেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ভারতের বিভিন্ন মহলে। খবরে বলা হয় এই বিমান ঘাঁটি নির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন। এমন খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভারত সরকার।
ভারতের শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লালমনিরহাটে যদি বিমান ঘাঁটি নির্মাণ হয় তা হলে সেটি হবে ভারতের মাথা ব্যথার কারণ। এই শিলিগুড়ি করিডোরের সরু চিকেন নেক দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে তাদের পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। যা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত। বাংলাদেশের কৌশলগত নিরাপত্তার জন্য এই বিমান ঘাঁটিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেও তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টগুলোতে। এই বিমান ঘাঁটি ভারতের চিকেন নেকের উপর এখন নিশ্বা:স ফেলছে বলেও উল্লেখ্য করা হয়। যদিও অনেক আগেই এই খবরকে পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর।
সম্প্রতি কিছু ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা হয় যে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী লালমনিরহাটে ৭০০ একর জমি নিয়ে একটি নতুন বিমান ঘাঁটি নির্মাণ করবে। সেখানে ৭০টি যুদ্ধবিমান রাখার ব্যবস্থা থাকবে এবং এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো বিচ্ছিন্ন করার মতো কৌশলগত অবস্থানে থাকবে। পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, বিমান ঘাঁটি তিনটি বিভাগে ভাগ করা হবে—কমব্যাট অপারেশনস বিভাগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত বিভাগ, এবং একটি মহাকাশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
এই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, দাবিটির সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ২৭ নভেম্বর টাঙ্গাইলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বার্ষিক মহড়া ‘এক্সারসাইজ ফ্লাশ পয়েন্ট ২০২৪’-এর ওপর ভিত্তি করে এমন গুজব ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মহড়া নিয়ে প্রকাশিত তথ্য বা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবির কোনো উল্লেখ নেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ আইএসপিআর স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, চীনের সহায়তায় বিমান ঘাঁটি নির্মাণের দাবি সম্পূর্ণ ভুয়া। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের কোনো প্রকল্প বা আলোচনাই হয়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে অবনতি হতে শুরু করে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কের। এর পের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সনাতন ধর্মাবলম্বী ইস্যুতে গুজব ছড়ানোসহ একের পর এক বিতর্কিত ভূমিকায় সমালোচনায় বিদ্ধ হয় ভারত। ধারণা করা হচ্ছে এতে অনকেটাই নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছে ভারত।