ইলিয়াসকে হত্যার আগে ও পরে যে নাটক সাজিয়েছিল মেজর জিয়া

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এম ইলিয়াস আলীকে গুম করার পর হত্যা করা হয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। তথ্যমতে, এই গুম ও হত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুনীচক্র এরপর ইলিয়াসের লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিতে র্যাব সদস্য সার্জেন্ট তাহেরুল ইসলাম ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।গত ৫আগস্টের পর ‘আয়নাঘর’ নামক বন্দিশালা থেকে ১৫ বছরে আটক অনেকেই ছাড়া পান। তখন ফেসবুকে রটে ‘আয়নাঘরে’ পাওয়া গেছে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে। পরে জানা যায়, তাকে গুমের পর হত্যা করা হয়েছে।
স্বীকারোক্তিতে তাহেরুল জানান, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছিল। এরপর তৎকালীন র্যাব কর্মকর্তা এবং পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হওয়া জিয়াউল আহসান অফিসে ফিরে স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, আজ বড় একটি অপারেশনে সাকসেসফুল হলাম। শেষ করে তাকে যমুনায় ফেলে দিয়ে এসেছি।
জিয়ার টিম ইলিয়াস আলীকে নিয়ে যাওয়ার পর কী হয়েছে সেটা তিনি বলতে পারবেন না। গুম তদন্ত কমিশন সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার নির্দেশেই ইলিয়াস আলীকে গুম এবং খুন করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে এসএসএফ-এর মহাপরিচালক ছিলেন লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সওরাওয়ার্দী। তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ডিজিএফআইর তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে ইলিয়াস আলীকে গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
তাহেরুল আরও জানান, হত্যার আগে জিয়াউলের নির্দেশে ঘটনার রাতে শেরাটন হোটেল থেকে তিনি ইলিয়াস আলীকে অনুসরণ করেন। মহাখালী পৌঁছার পর জিয়াউল নিজেই আরেকটি টিম নিয়ে ইলিয়াসের গাড়ি অনুসরণ করেন। তার গাড়িটি বাসায় পৌঁছার আগেই বনানীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে চালকসহ তাকে তুলে নেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র আরও জানায়, ইলিয়াসকে হত্যা ছাড়াও র্যাবের জিয়াউল আহসানের কিলিং স্কোয়াডের এক সদস্য একদিনে ১১ জন এবং আরেক সদস্য ১৩ জনকে খুন করেছিল। তদন্ত কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, ইলিয়াসকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুজন সেনাসদস্য বর্তমানে সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। এরা হলেন— ওয়ারেন্ট অফিসার জিয়া ও ইমরুল। জিয়াউলের রানার হিসেবে গুম ও খুন মিশনের হুকুম তারা তামিল করতেন।
এরপর শেখ হাসিনা পুরাতন শাড়ি পরে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও কন্যাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধের জেরে খালেদা জিয়ার নির্দেশে অপহরণ করা হয়েছে।