শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়, রাত যেন বরফ শীতল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ এএম

জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছবি : সংগৃহীত
অগ্রহায়ণের শেষ সপ্তাহেই শীত জেঁকে বসেছে হিমালয়কন্যা খ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। হিমেল বাতাসে বরফ শীতল শীতে কাঁপছে জেলার জনপদ। তাপমাত্রা কমে শীতের প্রকোপে জর্জরিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তেঁতুলিয়া অফিস থেকে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ বলেন, রবিবারের চেয়ে আরো তাপমাত্রা কমেছে। তাপমাত্রা কমে গত ১০ ডিগ্রির ঘরে এসেছে। সোমবার সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল। তার আগে শনিবার রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার ভোরেই সূর্য দেখা গেছে বলে জানান তিনি।
কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই ভোরেই দেখা যায় রক্তিম আভা নিয়ে জেগে উঠেছে সূর্য। প্রকৃতি জুড়ে হালকা কুয়াশা থাকলেও ঝিরঝির করে বইছে হিমেল বাতাস। প্রয়োজনের বাইরে অনেকেই ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে কাজে বের হতে দেখা গেছে নিম্নআয়ের মানুষদের। পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর, সবজি চাষি।
কয়েকজন শ্রমিক জানান, খুবই ঠান্ডা। রাত-ভোর পর্যন্ত বরফের মতো লাগে। এতো ঠান্ডা, কাজ কাম করা খুবই কঠিন হয়ে উঠে। ভোরে পালং শাক, লাফা শাক ও লাউ শাক তুলতে এসেছি। ধরা যাচ্ছে না, বরফের মতো মনে হচ্ছে। হাত অবশ হয়ে আসে। কিন্তু কি করবো, টাটকা সবজি বাজারে নিতেই কাজ করতে হচ্ছে।
ঘর-গৃহস্থালী ও শিশু ছেলে-মেয়েদের রান্না তৈরি করতে শীতে বেকায়দায় পড়েন গৃহিণীর। তারা বলছেন, সন্ধ্যার পর থেকেই খুবই ঠান্ডা। ঘরের বিছানা, ফ্লোরসহ আসবাবপত্র বরফ হয়ে উঠে। ঘরে আনা পানিও বরফ হয়ে উঠে। ভোরে উঠে রান্নাবান্না করা খুবই কষ্টকর।
এদিকে শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে দুই হাজার কম্বলের বরাদ্দ পেয়েছি। সেগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিশুস্বর্গ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে ৭ হাজার কোমলমতি শিশুদের শীতের উপহার দিচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শীতবস্ত্র দিতে শুরু করেছে। শীতার্তদের পাশে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত বলে জানান জেলা প্রশাসক।