×

বিএনপি

নির্বাচনে 'তারেক ইমেজ' ইমেজ ভরসা বিএনপির, চ্যালেঞ্জ হাওয়া ভবন স্মৃতি

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম

নির্বাচনে 'তারেক ইমেজ' ইমেজ ভরসা বিএনপির, চ্যালেঞ্জ হাওয়া ভবন স্মৃতি

নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রচারণায় তারেক রহমানকে সামনে রাখছে বিএনপি। ছবি : সংগৃহীত

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি এখন তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কৌশল পুনর্গঠন করছে। দলটির নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ও সরাসরি নেতৃত্ব নির্বাচনের মাঠে বিএনপিকে নতুন গতি ও ঐক্য এনে দেবে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে অতীতের ‘হাওয়া ভবনের স্মৃতি’ ও ভোটারদের পুরনো অভিজ্ঞতা।

বিগত কয়েক মাস ধরে বিএনপির মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তারেক রহমান। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তার দেশে ফেরা নিয়ে গুঞ্জন জোরদার হয়। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান নিজেই জানিয়েছেন, খুব শিগগির তিনি দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন।

এরপর থেকেই বিএনপির ভেতরে নতুন উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী নভেম্বরে তার দেশে ফেরা সম্ভাবনা বেশি, এবং এ উপলক্ষে বড় আয়োজনেরও প্রস্তুতি চলছে। বিএনপির নেতারা বিশ্বাস করেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন নির্বাচনের আগে দলীয় ঐক্য ও জনসম্পৃক্ততা দুই-ই বাড়াবে।

আরো পড়ুন : এনসিপির বিচক্ষণতার অভাব হয়েছে, তারা ভুল বুঝতে পারবে : ফখরুল

স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, যখন খালেদা জিয়া রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন, তখন তার উপস্থিতিই ভোট প্রভাবিত করেছে। এখন তারেক রহমান দেশে ফিরলে জনগণের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা আসবে, যা নির্বাচনে বিশাল প্রভাব ফেলবে।

তবে সব বিশ্লেষণ এতটা ইতিবাচক নয়। রাজনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, বিএনপি ও তারেক রহমানকে ঘিরে ভোটারদের অতীত অভিজ্ঞতা এখনো টিকে আছে। হাওয়া ভবনের মেমোরি থেকে বের হতে না পারলে এই ইমেজ তাদের জন্য বড় বাধা হতে পারে।

তিনি বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বেপরোয়াভাব দেখা দিতে পারে। অতীতে এমন আত্মবিশ্বাসই অনেক সময় দলের ক্ষতি করেছে। এবারও সে অভ্যাস কাটানো না গেলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ভোটারদের মধ্যে।

অন্যদিকে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে প্রবল আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন তার নির্দেশনা অনুযায়ী বৈঠক করছেন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় তার ছবিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখছেন।

উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুস ধীরন বলেন, এখন সবার একটাই প্রশ্ন, তারেক রহমান সাহেব কবে আসবেন। উনি এলে দল ঐক্যবদ্ধ হবে, নেতা-কর্মীরা আরো চাঙা হবে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে—

১️. নির্বাচনে জয়ের মোমেন্টাম তৈরি করা,

২️. মনোনয়ন বিভাজন দূর করে ঐক্য ফেরানো,

৩️. দেরিতে শুরু হওয়া নির্বাচনী প্রস্তুতির ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।

তারেক রহমান ২০০৭ সাল থেকে দেশের বাইরে রয়েছেন। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাবন্দি হলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দল পরিচালনার দায়িত্ব নেন তিনি। সতেরো বছর পর নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় তার দেশে ফেরা বিএনপির জন্য যেমন একটি বড় সুযোগ, তেমনি অতীতের নানা সমালোচনা ও বিতর্কও তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।

আরো পড়ুন : শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত বিএনপি

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের নির্বাচন রাষ্ট্রপতিকেন্দ্রিক নয়; বরং আসনভিত্তিক সংসদীয় ব্যবস্থা। ফলে শুধু একজন নেতার জনপ্রিয়তা যথেষ্ট নয়, প্রতিটি প্রার্থীর স্থানীয় গ্রহণযোগ্যতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, একজন নেতা একাই তিনশত আসন রেপ্রেজেন্ট করতে পারেন না। তবে তিনি যদি নিজের ইমেজকে ইতিবাচকভাবে গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে সেটার প্রভাব পড়বে কেন্দ্রীয়ভাবে।

তিনি আরো বলেন, তারেক রহমানকে ঘিরে এক শ্রেণির স্তাবক তৈরি হবেই। এটা ভাঙা কঠিন, বিশেষ করে বিএনপির মতো দলে। সিভিল ব্যুরোক্রেসি, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক পর্যায়ের অনেকেই এই মেরুর দিকে ঝুঁকবে, এটাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি।

সব মিলিয়ে, সতেরো বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বড় টার্নিং পয়েন্ট হতে যাচ্ছে, এ বিষয়ে কারও দ্বিমত নেই। তবে সেই প্রভাব কতটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হবে, তা নির্ভর করছে তিনি দেশে ফিরে কীভাবে দল পরিচালনা করেন, ঐক্য বজায় রাখেন এবং অতীতের ভাবমূর্তি কাটিয়ে নতুন নেতৃত্বের ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন কিনা তার ওপর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি

অগ্নিকাণ্ডের পর শাহজালালে নিরাপদে প্রথম ফ্লাইট অবতরণ

অগ্নিকাণ্ডের পর শাহজালালে নিরাপদে প্রথম ফ্লাইট অবতরণ

বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানালেন ভুক্তোভোগী

বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানালেন ভুক্তোভোগী

এয়ারপোর্ট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

এয়ারপোর্ট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App