লালমনিরহাট হাসপাতালে রোগীর খাবারের জন্য বিক্ষোভ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
লালমনিরহাট জেলার সদর হাসপাতালে রোগীর খাবার না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন চিকিৎসারত রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (১৮ডিসেম্বর) দুপুরে সদর হাসপাতালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
রোগীর স্বজনেরা বলেন, লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বহির্বিভাগ ও হাসপাতালের আন্তবিভাগীয় ভর্তি করা রোগীরা সরকারিভাবে বিনা মূল্যে সকালে নাশতা, দুপুর ও রাতে খাবার পেয়ে থাকেন। রোগীদের খাবার পরিবেশনের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে কর্তৃপক্ষ। আর সেই খাবার সময়মতো ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেয়ার দায়িত্বে থাকেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডায়েট ক্লার্ক।
এদিকে, দুপুরের খাবার ১২টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে পরিবেশন করার নিয়ম থাকলেও হাসপাতালে মানা হয় না কোনো নিয়ম। ঠিকাদার ইচ্ছামতো সময় ছাড়া অসময়ে খাবার বিতরণ করেন বলে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকেল ৩টার দিকে তড়িঘড়ি করে খাবার সংগ্রহ করে রোগীদের মাঝে বিতরণ করেন ঠিকাদারের লোকজন।
জেলা সদর হাসপাতালের খাবার অনিয়ম দীর্ঘদিনের হলেও দেখে না দেখার ভান করে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে খাবারের মান খুব নিম্নমানের বলে অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। বিক্ষুদ্ধকারী স্বজনদের মধ্যে এক ব্যক্তি জানান, অনেক রোগী হাসপাতালের খাবার না পেয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেয়ে থাকেন। যতগুলো রোগী ভর্তি থাকে তাদের প্রত্যেককে খাবার দেয়ার নিয়ম থাকলেও অনেক সময় রোগীরা তা পান না।
এ বিষয় রোগীদের সঙ্গে আলোচনা হলে তারা বলেন, বেলা দেড়টার সময় খাবার দেয়ার কথা থাকলেও বিকেল ৩টায়। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন রোগী খাবার পাননি। খাবার শেষ বলে জানালে যেসব রোগী খাবার পাননি, তাদের স্বজনেরা হাসপাতাল চত্বরে খাবারের জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় ঠিকাদারের লোকজন তড়িঘড়ি করে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে রোগীদের মাঝে পরিবেশন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। একই দিন অনেক ভর্তি রোগী সকালের নাশতাও পাননি বলে রোগীদের মাঝে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগী বলেন, খাবার কিছু রোগীকে দেয়ার পরে বলে শেষ হয়েছে। শুধু এটা নয় উৎকোষ ছাড়া হাসপাতালে বেড পাওয়া যায় না। এর উপর হাসপাতালের নোংরা পরিবেশে বসে খাবার খাওয়া খেতে কষ্ট হয়। চারদিকে শুধু দুর্গন্ধ। মুখে রুমাল ব্যবহার করা ছাড়া রুমে হাঁটা যায় না। হাসপাতালের টয়লেটের অবস্থা এতই খারাপ যে সবসময় ময়লা পানি জমে থাকে। দেখার কেউ নেই।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বাবুর্চি ফিরোজ আহমেদ বলেন, আজ ঠিকাদার বাজার করে দিতে বিলম্ব করায় রান্নার কাজ করতে দেরি হয়েছে। ফলে রোগীদের খাবার দিতে বিলম্ব হয়েছে।
সৃষ্ট ঘটনায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সামিনা খাতুন বলেন, হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ১১০ জন ভর্তি রোগীর মধ্যে ৮৪ জন রোগীর দুপুরের খাবার সময়মতো বুঝে পায়। বাকি রোগীদের খাবার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদারের লোকজন এসে দিয়ে দিয়ে গেছেন। রোগীদের খাবার পরিবেশনে কেন বিলম্ব হলো তা তদন্ত করে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।