শীতে আদা-চায়ের উপকারিতা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
নিয়মিত আদা চা পান করলে সর্দি-কাশির মৌসুমে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ছবি : সংগৃহীত
বর্তমান ব্যস্ত জীবনযাপন, দূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত অভ্যাসের কারণে অল্প বয়সেই ফুসফুসের জটিলতা বাড়ছে। শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, সিওপিডির মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের পাশাপাশি ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে।
ধূমপান, বায়ুদূষণ ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের সম্মিলিত প্রভাবে প্রতিদিনই ফুসফুসের ওপর বাড়ছে চাপ। তবে দৈনন্দিন খাবারে কিছু সহজ উপাদান অন্তর্ভুক্ত করলে ফুসফুস পরিষ্কার ও সক্রিয় রাখা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, সর্দি-কাশি বা মাথাব্যথা কমাতে আদা চায়ের ব্যবহার যেমন পরিচিত, তেমনই ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতেও আদা অত্যন্ত কার্যকর। আদার মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুনাশক উপাদান শ্বাসতন্ত্রকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। পাশাপাশি চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফুসফুসের কোষ রক্ষায় ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, আদার জিঞ্জেরল ও শোগোল নামের দুটি উপাদান ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। দূষণের কারণে শ্বাসনালিতে যে জ্বালা বা প্রদাহ তৈরি হয়, আদা তা সাময়িকভাবে প্রশমিত করে। একই সঙ্গে শ্বাসনালিতে জমে থাকা কফ স্বাভাবিকভাবে বের করে দিতে সহায়তা করে, ফলে শ্বাস নেওয়া সহজ হয় এবং বুকে চাপ কম অনুভূত হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, নিয়মিত আদা চা পান করলে সর্দি-কাশির মৌসুমে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আদা রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে, যা ফুসফুসকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
ফুসফুস সুস্থ রাখতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বা দূষিত পরিবেশে বাইরে থাকার পর আদা চা পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সহজ উপকরণেই ঘরে তৈরি এই চা শ্বাসতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করতে পারে বলে তারা মনে করেন।
আদা কীভাবে ফুসফুসের সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যকর এবং আদা চা বানানোর পদ্ধতি নিচে সহজ ভাষায় আলোচনা করা হলো:
আদা ফুসফুসের জন্য অনেকটা ‘সাফাইকর্মী’-র মতো কাজ করে।
১. বায়ু চলাচল সহজ করে : টাটকা আদা কুচিয়ে জলে ফুটিয়ে খেলে যে হালকা ঝাঁঝালো ভাব লাগে, তা গলায় আরাম দেয়। আদার মধ্যে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান ফুসফুসের বায়ু চলাচল পথকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে।
২. শ্বাসকষ্টে আরাম : কাশি হলে বা দূষিত বাতাস শরীরে গেলে শ্বাসের কষ্ট হয়। আদা চা পান করলে এই পরিস্থিতিতে আরাম পাওয়া যায়, কারণ আদা ফুসফুসের বাতাস চলাচলের পথগুলোকে পরিষ্কার করে দিতে পারে।
৩. শ্বাসকষ্ট কমায় : হাঁপানি, সিওপিডি বা ফুসফুসের অন্যান্য সংক্রমণজনিত প্রদাহের কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। গরম আদা চা (চাপাতা ছাড়াও) পান করলে ফুসফুসের পেশিগুলো শিথিল হয় এবং বাতাস চলাচল সহজ হয়ে যায়। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসা জরুরি হলেও, আদা বা প্রাকৃতিক উপাদানও শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
কীভাবে বানাবেন আদা চা?
১. একটি পাত্রে দু'কাপ পানি নিন। ২. তাতে এক ইঞ্চি পরিমাণ আদা থেঁতো করে দিন। ৩. পানি ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ৪. আপনি চাইলে এই সময় সামান্য চা-পাতাও দিতে পারেন, আবার নাও দিতে পারেন। ৫. জল ছেঁকে নিন এবং চায়ের মতো পান করুন। ৬. মিষ্টি স্বাদ চাইলে এতে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
