ধর্ম যার যার, উৎসব সবার—এই চেতনায় প্রতি বছর ঈদ, পূজা কিংবা বড়দিন এলে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ। রঙিন সাজে সেজে ওঠে তিলোত্তমা কলকাতা। কেনাকাটায় মেতে ওঠে মানুষ, আর স্বভাবতই খুশির হাওয়ায় ভরে ওঠে ব্যবসায়ীদের মুখ। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে ম্লান হয়ে গেছে বড়দিনের কেনাকাটা।  

কলকাতার নিউমার্কেট চত্বর, যা ‘এক টুকরো বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত। আগে বড়দিনের সময় বাংলাদেশি পর্যটকে ভরে থাকত। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে এ বছর দৃশ্যটি পাল্টে গেছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, বড়দিনের মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পর্যটক আসার কথা, তার তুলনায় এবার অনেক কম আসছেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এ সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।।  

বর্তমানে যারা কলকাতায় আসছেন, তাদের বেশিরভাগই আগের বা মেডিকেল ভিসা নিয়ে আসা পর্যটক। ঢাকার বাসিন্দা ঝুমা মজুমদার তার মাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছেন কলকাতায়। নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়ে তিনি বলেন, মায়ের হৃদযন্ত্রের চিকিৎসা করিয়ে দেশে ফিরব। তার আগে পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা করলাম। আগের মতো বাংলাদেশি পর্যটক এখন আর তেমন দেখা যাচ্ছে না।  

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী পারভেজ রহমান জানান, বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে বাংলাদেশি ছাড়াও বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা আসছেন। তবে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কম হওয়ায় ব্যবসায় প্রত্যাশিত লাভের সুযোগ কমে গেছে।  

পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১,০০০ বাংলাদেশি পর্যটক কলকাতায় প্রবেশ করেছেন। এর আগের সময়ে এই সংখ্যা ছিল ২০০ থেকে ২৫০। তবুও আগের তুলনায় এটি খুবই কম।  

নিউমার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী মনোতোষ সরকার বলেন, বড়দিন ও নতুন বছর উপলক্ষে আমরা আরও বেশি বাংলাদেশি পর্যটকের আশা করছি। তারা আমাদের ব্যবসার বড় অংশজুড়ে রয়েছেন।  

বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে এবার কলকাতার বড়দিনের উৎসবের উন্মাদনা অনেকটাই কমে গেছে। তবে ব্যবসায়ীরা শেষ মুহূর্তে পর্যটক সংখ্যা বাড়ার প্রত্যাশায় রয়েছেন।