উত্তর কোরিয়ায় ২ টন ইউরেনিয়াম মজুত, ৪৭ পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ২ হাজার কেজি (২ টন) উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে। যা দিয়ে প্রায় ৪৭টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যাবে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার একীকরণ মন্ত্রী চুং ডং-ইয়ং এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।
বহু আগে থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে আসছে, উত্তর কোরিয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মজুত করে রেখেছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রধান উপাদান এটি।
চুং ডং-ইয়ং বলেন, ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে-উত্তর কোরিয়ার মজুতকৃত ইউরেনিয়াম ৯০ শতাংশের বেশি বিশুদ্ধ। এর পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কেজি। বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজ চারটি স্থানে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। একটি পারমাণবিক বোমা তৈরিতে মাত্র ৫ থেকে ৬ কেজি প্লুটোনিয়ামই যথেষ্ট।
উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির মূল উপাদান। পারমাণবিক চুল্লিতে এটি দহন করে প্লুটোনিয়ামে রূপান্তর করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা অনুযায়ী, একটি পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ৪২ কেজি প্রয়োজন। সেই হিসাবে উত্তর কোরিয়ার ২ হাজার কেজি দিয়ে প্রায় ৪৭টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।
চুং ডং-ইয়ং বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক উন্নয়ন বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। তবে শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এটি রোধ করা যাবে না। সমাধানের একমাত্র পথ হতে পারে পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সরাসরি শীর্ষ বৈঠক।
এ প্রসঙ্গে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানায়, দেশটির নেতা কিম জং উন আলোচনায় আগ্রহী। তবে শর্ত রয়েছে—তিনি পারমাণবিক অস্ত্রাগার বজায় রাখতে চান।
২০০৬ সালে প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর থেকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উত্তর কোরিয়া। যদিও দেশটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের বিস্তারিত এখনো প্রকাশ্যে আনেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, উত্তর কোরিয়ার একাধিক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক স্থাপনাটিও আছে। অতীতে এটি বন্ধ করার ঘোষণা দেয়া হলেও ২০২১ সালে পুনরায় সক্রিয় করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার একীকরণ মন্ত্রী অভিযোগ করেন, অতীতের সরকারগুলো উত্তর কোরিয়াকে ‘প্রধান শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত করলেও কূটনৈতিকভাবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।