মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের অন্যতম স্থপতি, সিপিবি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সংসদের সাবেক এমপি মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী রবিবার ৯ অক্টোবর। ১৯৮৭ সালের ৯ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী মস্কোতে তিনি মারা যান।

মোহম্মদ ফরহাদ ১৯৩৮ সালের ৫ জুলাই পঞ্চগড়ের বোদায় জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র মোহাম্মদ ফরহাদ মহান ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মুুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে প্রথম সারির নেতৃত্ব দেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুবার জেল, জুলুম, হুলিয়া, নির্যাতন ভোগ করেন। ৩৫ বছরের ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনে তিনি পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়া-এরশাদের আমলে কারাবরণসহ দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর আত্মগোপন বা কারান্তরালে ছিলেন। ’৫৪ সালে তাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কুখ্যাত নিরাপত্তা আইনে বিনা বিচারে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখা হয়। ১৯৫৫ সালে ১৭ বছর বয়সে মোহাম্মদ ফরহাদ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করে। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে ফরহাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি-ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর প্রধান সংগঠক ছিলেন তিনি।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের ক্ষমতা দখলের পর সামরিক শাসনবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য তথা ১৫ দলীয় ঐক্যজোট গঠন, জাতীয় দাবি ৫ দফা প্রণয়ন ও যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি বলিষ্ঠ ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আগামী রবিবার মোহাম্মদ ফরহাদের মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য আগামী রবিবার সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে সিপিবিসহ বিভিন্ন দল-সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।