কূটনৈতিক পাসপোর্টের পরিবর্তে সাধারণ পাসপোর্ট পেতে গোপনে গত ১৮ অক্টোবর আবেদন করেছেন আলোচিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। সাকিব আল হাসানকে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে পাসপোর্ট সরবরাহের আয়োজন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের দায়িত্বে থাকা চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মীযানুর রহমান, পাসপোর্ট কাউন্সেলর সাইফুল ইসলাম ও প্রথম সচিব মাজহারুল ইসলাম নিজেদের দায়িত্বে গোপনে পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।

সূত্র জানায়, পাসপোর্টের আবেদনের জন্য গোপনে দুবাই যান সাকিব আল হাসান। তার আগে দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মীযানুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত করেন। পরে ১৮ অক্টোবর সকালেই দূতাবাসে যান সাকিব। দূতাবাসে পৌঁছালে প্রথমে তাকে গোপনে মীযানুর রহমানের কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে সময় নষ্ট না করে মীযানুর রহমান তাকে সঙ্গে করে পাসপোর্ট কাউন্সেলর সাইফুল ইসলাম ও প্রথম সচিব মাজহারুল ইসলামের কক্ষে নিয়ে যান। সেখান থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র ও প্রয়োজনীয় ফরম প্রস্তুত করে দেন কর্মকর্তারা। সাকিব আল হাসান দূতাবাসে গিয়েছিলেন টি-শার্ট গায়ে দিয়ে। ফলে ছবি তোলার সময় বিব্রত বোধ করেন। পাসপোর্ট এনরোল করার সময় এক কর্মকর্তা নিজের ব্লেজার খুলে সাকিবকে পরিয়ে দেন। পরে দুই কর্মকর্তা সাকিবের সঙ্গে ছবি তোলেন।

জানা যায়, সাকিব আল হাসান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে এই ফরম্যাটকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন। এ জন্য মামলা হওয়ার পরও তার দেশে ফেরার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত ছিল। সেজন্য তিনি প্রথমে দুবাই যান। তখন বিষয়টি গোপন রাখা হয়। নিরাপত্তার কারণে তাকে দেশে প্রবেশের বিষয়ে অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয় বলে গণমাধ্যমকে জানান সাকিব আল হাসান; কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশে আসা সম্ভব না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এর পরই নতুন পাসপোর্ট আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

গোপনে পাসপোর্ট দেয়ার বিষয়ে আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাসপোর্ট কাউন্সেলর মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি মেইল এসেছে। সেখানে থেকে বলা হয়েছে সাকিব আল হাসানের ইস্যুটি দেখতে। উনিও (সাকিব) আমাদের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে তারপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।  

উল্লেখ্য, গত জুলাই-আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত পোশাককর্মী রুবেল হত্যা মামলার আসামি সাকিব আল হাসান। গত ৫ আগস্ট রিং রোডে মিছিলে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ৭ আগস্ট হাসপাতালে মারা যান রুবেল। গুলি করার নির্দেশদাতা হিসেবে সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে ডিএমপির আদাবর থানায় হত্যা মামলা হয়। সাকিবকে মামলার ২৮ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদদে কেউ মিছিলে গুলি ছোড়ে। এরপর সাকিবকে নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।