অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে উঠবে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কানাডার সাত সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন কানাডিয়ান সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান।

সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদার, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রতিনিধিদলকে জানান, আপনারা এমন এক সময় বাংলাদেশে এসেছেন, যখন দেশটি এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে- একটি তরুণ-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে। এখন আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে।

আরো পড়ুন : নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে যে বার্তা দিলেন অর্থ উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কানাডার দীর্ঘদিনের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পেরিয়ে গেছে। তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনই একমাত্র টেকসই সমাধান। বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। হাজার হাজার শিশু এখানে জন্ম নিচ্ছে ও বড় হচ্ছে- কিন্তু তারা জানে না তাদের নাগরিকত্ব কী বা ভবিষ্যৎ কী। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠছে।

সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি একটি গুরুতর মানবিক উদ্বেগের বিষয়। আমি কানাডার পার্লামেন্টে এ বিষয়ে কথা বলব এবং এ সংকট মোকাবিলায় কানাডার অব্যাহত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।

তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ড. ইউনূসের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বের উচিত এই জনগোষ্ঠীর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সাক্ষাতে কানাডার সংসদ সদস্য সালমা জাহিদ, সামির জুবেরি (বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রীর সংসদীয় সচিব), হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল সিইও মাহমুদা খান, হিউম্যান কনসার্ন ইউএসএ–এর সিইও মাসুম মাহবুব, জেস্টাল্ট কমিউনিকেশনসের সিইও আহমদ আতিয়া এবং ইসলামিক রিলিফ কানাডার সিইও উসামা খান উপস্থিত ছিলেন।

সামির জুবেরি বলেন, কানাডা বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বহুমুখী করতে চায়। আমরা বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে কাজ করছি। বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে গভীর মানবিক সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী এশিয়া সফরে গিয়েছিলেন বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্য নিয়ে।

সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ পোশাক, কৃষি ও অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের সুযোগ এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি শিল্পে কানাডার অংশগ্রহণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।

এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।