বাংলাদেশ ন্যাপ
ভাসানী এত অবহেলিত কেন?

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
‘মজলুম জননেতা মাওলানা আবুদল হামিদ খান ভাসানীর স্বপ্নের বাংলাদেশ আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ৪৭-এ বৃটিশবিরোধী আজাদী আন্দোলন, ৪৯’র সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানে প্রথম বিরোধী দল গঠন, ৫২’র সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন, ভারতীয় পানি আগ্রাসনবিরোধী লংমার্চ—কোথায় নেই ভাসানী? তবুও মাওলানা ভাসানী এত অবহেলিত কেন?’ শাসকগোষ্ঠীর নিকট প্রশ্ন রাখেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া আগামী ১৭ নভেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের এই অন্যতম রূপকারকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের সুযোগ এখনো আছে। সেই সুযোগ গ্রহন করে ভুল সংশোধন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বর্তমান সরকার সেই দায়িত্ব পালন করবেন বলে সমগ্র জাতি প্রত্যাশা করে।’
তারা বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী আমৃত্যু তিনি সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই আর কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবতীর্ণ ছিলেন। ভাসানীকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে, দেশের স্বার্থে-মানুষের স্বার্থে। মওলানা ভাসানীর প্রদর্শিত পথেগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
আরো পড়ুন: আর কত ধৈর্য ধরবে রাজনীতিবিদরা: আবদুস সালাম
নেতারা আরো বলেন, ‘রাজনীতি আর সংগ্রামের মাধ্যমে একটি জাতিকে জাগিয়ে তোলেন যিনি, তিনিই ভাসানী। ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে এক প্রবলপ্রাণ বিদ্রোহের নাম, মানবতার তূর্যবাদক এক সেনানির নাম মাওলানা ভাসানী। মজলুম জননেতা ৯৬ বছর বয়সে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা লংমার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের বীজ বপন করেছিলেন। মাওলানা ভাসানীকে তাদের ধারণ করতে হবে, তাহলেই মুক্তি।’
তারা বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাননি বটে, তবে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের অনুঘটক ছিলেন। আজ মাওলানা ভাসানীকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু, ষড়যন্ত্রকারীরা জানে না, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন মাওলানা ভাসানী দেশপ্রেমিক মানুষের হৃদয়ে থাকবেন।’
নেতারা বলেন, ‘বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম রূপকার ও স্বপ্নদ্রষ্টা। তাকে মৃত্যুর এত বছর পরও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে অপারগতা এই রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের ব্যর্থতা ও সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচায়ক।’
নেতারা আরো বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি তিনি দেশ, মাটি আর মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। একটি শোষণহীন, অসাম্প্রদায়িক, সাম্য আর পালনবাদী সমাজব্যবস্থার জন্য নিজের জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন। মানব মুক্তির আদর্শ থেকে তিনি এক দিনের জন্যও বিচ্যুতি হননি বা অবসর খোঁজেন নাই। জীবনের প্রায় প্রতিটি বছর, মাস, সপ্তাহ, দিন তিনি আন্দোলন, সংগ্রাম, কর্মসূচির মধ্যেই থেকেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এত দীর্ঘকালব্যপী ও ধারাবাহিকভাবে কেউ সক্রিয় আন্দোলন, সংগ্রাম, কর্মসূচির ভেতর থেকেছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা নেই বললেই চলে।’