বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করা। কিন্তু তারা সেটি করেনি। কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। শুধু ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র বিনির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই যথেষ্ট। আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) শুধু সংস্কারের প্রস্তাব দিতে পারেন।  

গত ৫ আগস্টের গণবিপ্লবের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, শুধু ছাত্রদের আন্দোলনে বিপ্লব হয়নি। বর্তমান সরকার শুধু ছাত্রদের সরকার নয়, সবার সরকার। বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়েছে। আমি বলবো, সবাইকে স্মরণ করবেন। এ সময় সেনানিবাসে আওয়ামী লীগপন্থি দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ অফিসারদের আশ্রয় দেয়া উচিত হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

আরো পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি রোডম্যাপ চাইলো জামায়াত

অন্তর্বর্তী সরকারকে অনেকেই দুর্বল সরকার মনে করে জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিভিন্নভাবে প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। সুতরাং আমি বলব, ড. ইউনূস একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমেরিকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন, কাজ করেছেন। আপনারা যে দুর্বল নন, সেটি প্রমাণ করতে ছাত্র-জনতাসহ সবার সঙ্গে মতবিনিময় করুন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা নিন।

মেজর হাফিজ বলেন, আমাদের সবার রোগ হলো দুর্নীতি। এর বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সে ধরনের আইনের কঠোর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমাদের দিতে হবে। পার্বত্যাঞ্চলে অস্থিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড়ের লোকজন সহজ-সরল। তাদের ভুল পথে পরিচালিত করার ষড়যন্ত্র হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি প্রতিবেশী দেশ ভারতকে বলব, তাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে উস্কানি দেবেন না। যুদ্ধের জন্য দেশের সব মানুষ প্রস্তুত রয়েছে। 

এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছর বয়সীদের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে। প্রত্যেক নাগরিক ১/২ বছরের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। 

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের জয়নুল আবদিন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।