অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ৯ মাসের ব্যবধানে আবারো ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন পাকিস্তানের তারকা পেসার মোহাম্মদ আমির। একই সঙ্গে অবসর নিয়েছেন অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য অবসর ভেঙে ক্রিকেটে ফেরেন আমির। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। পরবর্তী সময়ে আর কোনো সিরিজেই ডাক পাননি এই তারকা। ফলে অনেকটা অভিমানেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন তিনি।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আমির ও অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিমের অবসরের ঘোষণা জানানো হয়েছে। তবে পিসিবির এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক বার্তায় সিদ্ধান্তটি জানিয়েছিলেন ইমাদ। দুজনই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর জাতীয় দলের স্কোয়াডে সুযোগ পাননি।

পিসিবির বিজ্ঞপ্তিতে আমির জানান, ‘সব ফরম্যাটে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করাটা অনেক সম্মানের। এটি (অবসর গ্রহণ) কঠিন সিদ্ধান্ত, কিন্তু আমি মনে করি পরবর্তী প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া এবং পাকিস্তান ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নেয়ার এটাই সঠিক সময়। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পিসিবি ও পাকিস্তানি সমর্থকদের পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা।’

এর আগে অবসরের ঘোষণায় ইমাদ বলেন, ‘অনেক চিন্তা-ভাবনার পর আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাকিস্তানকে বৈশ্বিক আসরে প্রতিনিধিত্ব করা আমার জীবনের বড় গর্বের বিষয় এবং প্রতিবারই সবুজ জার্সি গায়ে জড়ানোর অনুভূতি চিরস্মরণীয়। যখন এই অধ্যায়ের সমাপ্তি হওয়ায় আমি আমার ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দিকে মনোযোগী হতে চাই। যেখানে নতুন নতুন পন্থায় আপনাদের বিনোদিত করতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি।’

দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করেছিলেন বাঁহাতি পেসার আমির। কিন্তু স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনায় তাতে বড় ধাক্কা লাগে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরলেও আর পুরোনো আমিরকে দেখা যায়নি। তবে ঠিকই নিজের সহজাত বোলিং প্রতিভায় বুঁদ করছিলেন ভক্তদের। কিন্তু জাতীয় দলে তার আবারো ডাক পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়ে ক্রমান্বয়ে। ২০০৯ সালের জুনে আন্তর্জাতিক অভিষেক হওয়ার পর পাকিস্তানের হয়ে ৩৬ টেস্ট, ৬১ ওয়ানডে ও ৬২টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। তিন ফরম্যাটে ২৭১ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১১৭৯ রান করেন আমির। তিনি ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপাজয়ী দলের সদস্য।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের জার্সিতে ৫৫টি ওয়ানডে ও ৭৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ইমাদ ওয়াসিম। ৭৫টি টি-টোয়েন্টিতে ৭৩টি উইকেট নেওয়ার সঙ্গে করেছেন ৫৫৪ রান। ছিলেন শর্টার ফরম্যাটের নাম্বার ওয়ান বোলারও। এছাড়া ৫৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তার উইকেট ৪৪টি, পাশাপাশি ৪২.৮৬ গড়ে ৯৮৬ রানও আছে তার। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপাটাও। ২০১৬ ও ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপও খেলেছিলেন ইমাদ।