টর্পেডো কি? টর্পেডো কীভাবে কাজ করে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতা বিদ্রোহীতে টর্পেডো নামক একটি বস্তুর কথা উল্লেখ আছে। কবিতার একটি পংতিতে কবি বলেছেন, "আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম, ভাসমান মাইন"।
এদিকে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে হঠাৎই জোয়ারের খালের পানিতে ভেসে আসে একটি টর্পেডো । খালের জোয়ারের পানির সঙ্গে এমন জিনিস ভেসে আসার খবর পেয়ে শত শত স্থানীয় মানুষ এটি দেখতে ভিড় করেন ওই খালের পাশে। কারণ স্থানীয়রা আগে কখনো এমন জিনিস দেখেননি। কারো কারো মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করতেও দেখা যায়। ওই এলাকার কেউ কেউ হয়তো জানতেও পারেন এর সম্পর্কে । এছাড়া যারা টর্পেডো সম্পর্কে জানেন না তারা চলুন যেনে নেই টর্পেডো কি? টর্পেডো কীভাবে কাজ করে?
টর্পেডো আসলে কী?
এটি মূলত যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংসকারী বিষ্ফোরক বা বোমা। ভেঙে বললে টর্পেডো হচ্ছে পানির তলদেশে চলমান এক ধরণের অস্ত্র যা পানির তলদেশে বা পানির উপর থেকে অর্থাৎ উভয় পক্ষ দিয়েই লক্ষবস্তুতে নিক্ষেপ করা যায়। যার ভিতরে সমুদ্রযান ধ্বংস করার জন্য বিস্ফোরক মজুদ থাকে।
টর্পেডো কিভাবে কাজ করে?
টর্পেডো এমন এক গাইডেড বিস্ফোরক যা পানির নিচ দিয়ে অতিক্রম কতে লক্ষ ভেদে আঘাত হানতে পারে। টর্পেডো ছোড়ার জন্য সাধারণত রকেট ইন্জ্ঞিন অথবা জেট ইন্জ্ঞিন ব্যবহার হয়ে থাকে। একটি টর্পেডো সাধারণত ১০-২০ মিনিট চলতে পারে।এবং কিছু মাইলের মধ্যে তা লক্ষ্যভেদে আঘাত হানতে সক্ষম।কোন টর্পেডোই এটার ফুল রেঞ্জের ব্যবহার করা যায়না।
টর্পেডোর কাজ কী?
টর্পেডো হচ্ছে এক ধরনের সেলফ প্রোপেলড মিসাইল, যেটি পানির নিচ দিয়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
এর ভেতরে সমুদ্রযান ধ্বংসের জন্য বিস্ফোরক ওয়ারহেড যুক্ত থাকে। লক্ষ্যবস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষ হলে অথবা কাছাকাছি আসলে এটি বিস্ফোরিত হয়।
যে কোনো বড় জাহাজ ধ্বংস করে দেয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়। সাধারণত বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী এটি ব্যবহার করে থাকে।
আগে এটিকে অটোমোটিভ, অটোমোবাইল বা ফিশ টর্পেডো বলা হতো। এটি "ফিশ" বা মাছ নামেও পরিচিত ছিলো।
"টর্পেডো" নামটি মূলত বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের জন্য প্রযোজ্য ছিলো। যার অধিকাংশই বর্তমানে "মাইন" নামে পরিচিত।
অন্যদিকে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রাম সংলগ্ন ভাঙা খালে পাওয়া ওই টর্পেডোটি সম্পর্কে কোস্টগার্ড রাঙ্গাবালী আউটপোস্টের কন্টিনজেন্ট মি. আজাদ গণমাধ্যমকে জানান, টর্পেডো অনেক ভারী থাকে। সাধারণত এটা পানির নিচে থাকে। যেহেতু এটি ভেসে আসছে, সুতরাং ব্যবহার হয়েছে কিংবা ড্যামেজ হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে এর ভেতরে কোনো বাতাস থাকলে তাহলে বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও জানান তিনি।
বরিশালের শেরে বাংলা নৌবাহিনী ঘাঁটির বিশেষজ্ঞ দলের একজন সদস্য জানান, নৌবাহিনীর দলটি যখন ঘটনাস্থলে গিয়েছেন তখন খালে ভাটি চলছিলো। এ কারণে তারা কোনো ধরণের তৎপরতা চালাতে পারেননি। তবে নদী ও খালে জোয়ার শুরুর পর উদ্ধার তৎপরতা চালানোর কথা বলেন তিনি।