সঠিক ব্যবস্থাপনায় পয়ঃবর্জ্য হতে পারে সম্পদ

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হলে অর্থনৈতিক সূচকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবেশসহ অন্যান্য বিষয়েও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরি করতে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বেশি জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা প্রয়োজন। সঠিক ব্যবস্থাপনায় পয়ঃবর্জ্য সম্পদে রূপ নিতে পারে। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শুধু সিটি করপোরেশন অথবা পৌরসভায় নয়, গ্রাম পর্যায়েও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে এই খাতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও অর্থায়ন বাড়াতে হবে।
দেশের পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে কাজ করছি -মো. তাজুল ইসলাম
বেসরকারি খাত ও এনজিওদের পক্ষ থেকে পয়ঃবর্জ্য ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং পৌরসভা এলাকায় কীভাবে এটি আরো কার্যকর ও আর্থিকভাবে টেকসই করা যায়, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এমডিজি অর্জনের পর বাংলাদেশ সরকার এসডিজি ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা বাংলাদেশকে গেøাবাল নর্থের দেশগুলোর সমকক্ষ দেখতে চাই। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশ গড়তে সবধরনের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নিয়ে পয়ঃবর্জ্য, কঠিন বর্জ্যসহ অন্য সব ধরনের বর্জ্য এমনভাবে ব্যবস্থাপনা করছি, যাতে পরিবেশ দূষিত না হয়। মানুষের স্বাস্থ্যের হানি না ঘটে। বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় পয়ঃবর্জ্যরে পরিমাণ অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও খোলা স্থানে মল ত্যাগ ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হলে শুধু অর্থনৈতিক সূচকের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করলেই হবে না- স্বাস্থ্য, পরিবেশসহ অন্য সব প্যারামিটারেও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে, অর্থাৎ সামগ্রিক উন্নয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে পৌরসভাগুলোকেও নিজস্ব আয় বৃৃদ্ধি করতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরি করতে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।
সমন্বিত চেষ্টায় উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব -শ্যামল দত্ত
বর্জ্য ব্যবস্থাপনাটা একটি চ্যালেঞ্জ। আমাদের জীবনযাপন পাল্টে যাচ্ছে। নগরায়ণ ও আধুনিকতার দিক থেকে আমরা নতুন এক বাস্তবতার দিকে ধাবিত হচ্ছি। এ অবস্থায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি কীভাবে সমাধান হবে সেদিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কীভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে সেটি আমরা অনুসরণ করতে পারি। একই সঙ্গে সব পক্ষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে একটি সম্মিলিত বাস্তবায়নযোগ্য নীতিমালা তৈরি করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সব দিক বিবেচনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন প্রতিটি গ্রাম হবে শহর, বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা সবাই একটি উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি। এখানে সরকারি-বেসরকারি সব সেক্টর সমন্বিতভাবে কাজ করলেই একটি সুন্দর, উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব হবে। আমরা যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি সেই জায়গায় অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সেই জায়গা থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে এড়িয়ে আমরা উন্নত বাংলাদেশ গড়তে পারব না।
প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা চাই -এস. এম. এ. রশীদ
এনজিও ফোরাম ২০১৪ সাল থেকে ‘রেজিলিয়েন্ট, ইনক্লুসিভ এন্ড ইনোভেটিভ সিটিজ ইন বাংলাদেশ’ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে, যার লক্ষ্য পয়ঃবর্জ্য, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, উদ্যোক্তা তৈরি করা, দুর্যোগ সম্পর্কে জনগণকে প্রশিক্ষিত করার মাধ্যমে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং একটি রেজিলিয়েন্ট ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (এমসিসি) তৈরিতে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে তাদের অনুপ্রাণিত করা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা এমসিসির সঙ্গে একটি শক্তিশালী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছি, সিটি করপোরেশন জমি বরাদ্দ, সচেতনতামূলক প্রচারণা, নাগরিক ও নগর কর্মকর্তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও অবদান, স্থানীয় পর্যায়ে অপারেটরদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সব পর্যায় থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার দেখিয়েছে। প্রকল্পের কার্যক্রম এসডিজি-৬ ‘সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন’ এবং এসডিজি-১১ (টেকসই শহর ও কমিউনিটি) অর্জনে অবদান রেখেছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, সরকার, সেক্টরের ভেতরের এবং বাইরের সবার যৌথ প্রচেষ্টা অবশ্যই আরো ইতিবাচক ফলাফল আনবে এবং সিটিওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন (সিডব্লিউআইএস) নিশ্চিত করতে আমাদের সহায়তা করবে।
পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত হলে আমরা নিরাপদ থাকব -ইকরামুল হক টিটু
কঠিন বর্জ্য ও পয়ঃবর্জ্য আমাদের পরিবেশ দূষণ, স্বাস্থ্য সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন করছে। এ সংক্রান্ত সঠিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন বর্জ্যকেও সম্ভাবনার সম্পদে রূপান্তরিত করতে পারে। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে না পারলে পরিবেশ দূষণ বাড়বে। এমন বাস্তবতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে এড়িয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ গড়া সম্ভব নয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে এনজিও ফোরাম কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে আমরা ফিক্যাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এই অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প স্থাপনে সরকারের সহযোগিতা বাড়াতে হবে। শুধু সিটি করপোরেশন বা পৌরসভায় নয়, এই পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রাম পর্যায়েও নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে পুরো দেশ সমানভাবে নিরাপদ থাকবে এবং আমরা সবাই উপকৃত হবো।
সবার জন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে -নায়োকা মার্টিনেজ বাকস্ট্রোম
টেকসই পানি এবং স্যানিটেশন হাইজিন সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প প্রয়োজন, পাইলট প্রজেক্টের সময় চলে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শহরাঞ্চলে অভিবাসন বৃদ্ধি পাবে যা অপরিকল্পিত ও ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর জন্ম দেবে। শহুরে এলাকার জন্য উন্নত স্যানিটেশন পরিষেবা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সময়োপযোগী একটি জাতীয় নীতি থাকা দরকার। পরিষেবা সরবরাহের জন্য আরও বিকেন্দ্রীভূত পদ্ধতি ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন। ওয়াশ সেক্টরের মধ্যে আরো সমন্বয় থাকা দরকার।
অফসাইট এবং অনসাইট ট্রিটমেন্ট প্লান্টগুলোতে ফোকাস করতে হবে -শফিকুল আলম
দুই তিন দশক আগে বাংলাদেশ কমিউনিটি লিড টোট্যাল স্যানিটেশনের কথা বলত, এখন আমরা সিটি-ওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশনে চলে এসেছি। আমাদের অফসাইট এবং অনসাইট ট্রিটমেন্ট প্লান্টগুলোতে ফোকাস করতে হবে। লক্ষ্য করা গেছে, ফিক্যাল স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালানোর মতো উদ্যোগগুলোর জন্যও সরকারি ভর্তুকি প্রয়োজন। এটা বোঝা দরকার যে, বাংলাদেশে বিশেষত স্যানিটেশন সেক্টরে অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি তরুণ ও গতিশীল নগর কর্তৃপক্ষ স্যানিটেশন খাতে প্রয়োজনীয় দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন আনবে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শহরের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে -ড. তানভীর আহমেদ
প্রথমত, আমাদের বৈশ্বিক পরিস্থিতি দেখতে হবে, যেখানে বিশ্বব্যাপী ৮৫ শতাংশ বর্জ্য পানি অপরিশোধিত রয়ে যায়। আমরা যদি তথ্য এবং মানচিত্রের দিকে নিরপেক্ষভাবে নজর রাখি তবে দেখতে পাব যে, এর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত দেশগুলোর জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। এই দেশগুলোকেই মূলত ‘গেøাবাল সাউথ’ বলা হয়। স্যানিটেশনের স্থিতির সঙ্গেও এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী উত্তরের দেশগুলোতে ভালো স্যানিটেশন এবং পানি সরবরাহ রয়েছে। গেøাবাল সাউথের দেশ হিসেবে এসডিজি-৬, সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার কারণ হলো বাংলাদেশ শুধু বর্জ্য পানি ও মলমূত্র পরিশোধনের জন্য শুধু প্রচলিত পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল। যদিও গেøাবাল নর্থে এই পদ্ধতিগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তারা সফলভাবে সেগুলো ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশে এগুলো ব্যর্থ হওয়ার কারণ উচ্চ অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলো চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের অভাব। শহুরে জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বস্তিতে বাস করে এবং শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি স্যানিটেশন অর্জনকে হ্রাস করে। এসব বিবেচনায় আরবান এজেন্ডা এখন সময়ের দাবি। আমাদের বুঝতে হবে যে প্রতিটি অঞ্চল এবং কমিউনিটির নিজস্ব সমস্যা রয়েছে এবং এই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য আমাদের উপযুক্ত সমাধান প্রয়োজন। হয় গবেষণার মাধ্যমে অথবা স্যানিটেশন ভ্যালু চেইন সম্পন্ন করার মাধ্যমে।
স্যানিটেশন ট্যাক্স বিবেচনা করার সময় এসেছে -শহীদুল ইসলাম
বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেপটিক ট্যাঙ্কগুলো প্রতি তিন বছর পর পর নিষ্কাশন করা প্রয়োজন। এটা নাগরিকদের জন্য কম ব্যয়বহুল। বেনাপোল পৌরসভার মেয়র এ বিষয়ে একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা যখন দরিদ্র-বান্ধব উদ্যোগের কথা বলছি, তখন স্যানিটেশন ট্যাক্স বিবেচনা করার সময় এসেছে। কারণ কর সর্বদা মানুষের আর্থিক অবস্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত। সরকারের পক্ষ থেকে স্যানিটেশন খাতের অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য একটি বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি জনগণকে দায়িত্বশীল ও জবাবদিহি করার সর্বোত্তম উপায় হবে।
নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিতে দরকার ন্যায়সঙ্গত পরিষেবা -আলাউদ্দিন আহমেদ
এসডিজি বাস্তবায়নে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। এনজিও ফোরাম ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (এমসিসি) সহযোগিতায় সেখানে ফিক্যাল স্লাজ ম্যানেজমেন্টে দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছে। এমসিসির কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ মনোযোগ দেয়ায় মেয়রকে ধন্যবাদ জানানো উচিত। নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিতে ন্যায়সঙ্গত পরিষেবা নিশ্চিত করা দরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চিন্তা ও চেতনার সঙ্গে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বিশেষ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি যারা (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) চ্যালেঞ্জের (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) কাজটা করছে তাদের দিকেও সিটি করপোরেশনের ফোকাসটা দিতে হবে। তাদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া এ কাজে সাধারণ মানুষকেও প্রতিটি চেইনে সম্পৃক্ত করতে হবে। না হলে ইতিবাচক ফল আসবে না। একই সঙ্গে এ খাতে ব্যাপক আকারে লজিস্টিক সাপোর্ট ও অর্থায়ন বাড়াতে হবে।
এনজিওর পাশাপাশি সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে -শাহ মো. আনোয়ার কামাল
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। সরকার এবং সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে। সরকার এ বিষয়ে যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, সেটির সঙ্গে এই আলোচনা অনেক প্রাসঙ্গিক। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জড়িত সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়টা জরুরি এবং এটা করতে হবে। যাতে পরিবেশ দূষণ কমার পাশাপাশি মানুষের ভোগান্তি কমে। তাহলে সুন্দর একটি দেশ আমরা পেতে পারি। বাংলাদেশ আজ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। এনজিও ফোরাম সেই জন্মলগ্ন থেকে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে আসছে। বর্তমানে আমরা দেখছি, এনজিওদের ফান্ড কমে যাচ্ছে। এটাই বাস্তবতা। এখন সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে এতগুলো পৌরসভা ও উপজেলায় কাজ করা সম্ভব হবে না। এনজিওদের ওপর এখন ট্যাক্স চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সেটা না করে যদি বলা হতো আপনারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করেন, তাহলে আমরা ট্যাক্স কমিয়ে দেব। এমন উদ্যোগ নিলে সবার জন্য ভালো হতো।
এমসিসির কাছ থেকে ব্যাপক সহযোগিতা পেয়েছি -সাঈদা বেগম
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের দিকে মনোনিবেশ করে এই প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমরা, অক্সফাম বাংলাদেশ এবং এনজিও ফোরাম অনুভব করেছি যে ফিক্যাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট সময়ের প্রয়োজন। যখন সিদ্ধান্ত হয় যে ফিক্যাল স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করা হবে, তখন আমরা ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (এমসিসি) কাছ থেকে ব্যাপক সহযোগিতা পেয়েছি। এই অংশীদারিত্ব প্রকল্পের সবচেয়ে মূল্যবান অর্জন।
এফএসএম ব্যবসা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না -তাহমিদুল ইসলাম
জাতীয় কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ১০০টিরও বেশি এফএসটিপি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ। পৌরসভাগুলো এফএসটিপি নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ পেলেও সেগুলো চালানোর জন্য কি কোনো তহবিল পাবে? আমাদের মনে রাখতে হবে যে, প্রকৃতপক্ষে এগুলো চালানোর ক্ষমতা তাদের নেই। তাই সরকারকে অব্যাহত সহায়তা দিতে হবে। যেহেতু আমাদের এমন শহরও রয়েছে যা পুরোপুরি নর্দমাবিহীন, তাই বিকেন্দ্রীভূত নন-নর্দমা সমাধানগুলো বিবেচনা করতে হবে, যার কেস এবং প্রেক্ষাপট নির্দিষ্ট। আমরা যেমন মেডিকেল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলছি, তেমনি বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের জন্য আমাদের প্রতিটি সম্ভাব্য, সহজ, পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই সমাধানের দিকে নজর দিতে হবে।
এফএসএম পরিবেশের জন্য উপকারী। তাই এটি একটি ব্যবসা বা মুনাফা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। বরং এ বিষয়ে পৌরসভাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।