অজয় দাশগুপ্ত
কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের নাম। আয়তনে দেশটি ছোট হলেও এর ইতিহাস-ঐতিহ্যে বিশ্বের বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর চেয়ে কম নয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়া এই দেশটি বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কাছে উন্নয়নের মডেল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গত এক দশকে এই দেশটি যে পরিমাণ উন্নত হয়েছে তা বিশ্বের মুষ্টিমেয় দেশ ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই আজকে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মডেল। এখানকার মানুষ সব সময় তাদের নিজেদের সংস্কৃতি চর্চা করে। এ অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতিতে আকৃষ্ট হয়ে এখানে শাসন করতে এসেছিল আর্য, তুর্কি, আফগান, আরব, ব্রিটিশসহ নানা জাতি ও ধর্মের ব্যক্তিরা। তারা ব্যবসায়িক উদ্দেশে এদেশে এলেও নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশের মায়ায় দেশের শাসন ক্ষমতা পেতে মরিয়া হয়ে অনেকে শাসন ক্ষমতা দখল করে নেয়। ব্রিটিশরা এদেশের স্বাধীনচেতা মানুষকে দাসের জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। ব্রিটিশরা দুইশ বছর এদেশ শাসন করেছে। তাদের শাসনকালের শুরুতে এ অঞ্চলের যাদেরকে দরিদ্র কল্পনাও করা যেত না, শাসনের একশ বছর পর তারা হতদরিদ্রে পরিণত হয়েছিল। তাদের অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে পড়ে যে, এক সময় তারা ধনী ছিল এমন কল্পনা করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এত কিছুর পরও বাঙালি জাতির কঠিন মনোবলের কারণে ৪৭, ৫২, ৬৬ পেরিয়ে ১৯৭১ সালে নয় মাস একটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ইতিবাচক দৃষ্টিতে তাকালে এদেশের সুদূরপ্রসারী আলোকিত ভবিষ্যৎ রয়েছে।
তারুণ্য ঝলমল এই বাংলাদেশ এখন এক নতুন পথের সন্ধানে। সে পথ ও মত কী, বা কতটা তার প্রমাণ মিলবে সময়ে। আপাতত আমরা এটা দেখছি বাংলাদেশ ও তার ইতিহাস আর যাই মানুক একক কোনো কিছু মানে না। এককের নামে যে কোনো দানবই আমাদের দেশে পরাজিত হয়েছে। কারণ এই মাটি আর জাতির চরিত্রে একক দৈত্য বা দানবের জায়গা নেই। অতিকায় কিছু নয় সাধারণ মানুষের মনের কথা বুঝলেই বাংলাদেশকে জানা সম্ভব। বাংলাদেশ সবসময় একটি মায়াময় সমাজের দেশ। বাইরে থেকে যত ইন্ধন আর উস্কানি থাক না কেন মানুষ ভুল করে না। এই মানুষ বা জাতির স্বপ্ন আর আশা বাস্তবায়ন করা গেলেই ঝলমল করে উঠবে বাংলাদেশ। একটা কথা বলা দরকার, বাংলাদেশ স্বাধীন ও আশাপ্রিয় জাতির দেশ। তার স্বপ্ন আর ভবিষ্যৎ সে দিক থেকে অসীম।
পজিটিভ বাংলাদেশ সময়ের হাতে ছেড়ে দিলে আমাদের জাতি এগোতে পারবে না। আশপাশে তাকালে দেখব সে দেশগুলো তরতর করে এগিয়ে চলেছে। অনেক সময় পরিসংখ্যান আমাদের হয়ে কথা বললেও মূল সমস্যা অন্যত্র। মনে রাখতে হবে পরিসংখ্যান বা সমস্ত উপাত্তকে পিছে ফেলে এখন পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ। কেন ভয়াবহ? তারা পরিশ্রমী মেধাবী হলেও তাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন আগামীর কারণ রাজনীতি। রাজনীতি ও নেতৃত্ব ভিশনারী কিংবা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন না হলে কোনো জাতি এগোতে পারে না। তার প্রমাণ উপমহাদেশের এই দুই দেশ। অন্যদিকে নানাভাবে পিছিয়ে থাকলেও নেপাল বা শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। শ্রীলঙ্কা তাদের সর্বনাশের রাত কাটিয়ে এখন আবার জয়রথে। সম্প্রতি তাদের মূল্যস্ফীতি নেমে গেছে শূন্যের কোটায়। এটা কোনো ম্যাজিক না। এমন উজ্জ্বল উদাহরণ তখনই সম্ভব যখন জাতি সবকিছু বাদ দিয়ে দেশ গঠনে এক থাকে। আমাদের সুসময় ছিল, যেমন ধরুন : শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর অবস্থা, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক খাতে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। এ অগ্রগতিকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ঈর্ষণীয় বলে বর্ণনা করেন। এদেশের জনগণ নিজেদের সাফল্যের জন্য গর্ব করতে পারেন। কারণ দেশের অর্থনীতি এখন অনেক মজবুত। এদেশের এই বিপুল সম্ভাবনার নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। লন্ডনের প্রভাবশালী সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট ২০১২ সালের ৩ নভেম্বর ‘আউট অব দ্য বাস্কেট’ নিবন্ধে বলেছে, ‘কী করা যায়, সেটা দেখিয়ে দেয়ার মডেলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। কী করে উন্নয়নের মডেলে পরিণত হওয়া যায়, সেটা দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।’ ২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. কৌশিক বসু বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এশিয়ান টাইগার। এশিয়ার নেতৃত্ব প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি অন্যতম। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আজ বিশ্ববাসীর কাছেও অনুকরণীয়। তিনি বলেন, ভৌগোলিক দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ।
বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প পরিদর্শন শেষে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ খুবই পরিশ্রমী ও কর্মঠ। তারা পিছিয়ে থাকতে জানে না। বাংলাদেশে সফরে আসার আগে তিনি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি বাংলাদেশে যাওয়ার; যে দেশটি এক দশকে দারিদ্র্যসীমায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তাদের এ কৌশল অন্য দেশগুলো অনুসরণ করতে পারে।’ গত ২ অক্টোবর প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ আপডেট’ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, অতিদারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে বাংলাদেশের অর্জন অবিস্মরণীয়। দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভারত, পাকিস্তান ও ভুটানের মতো দেশকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।
এই অক্টোবরেই ইকোনমিস্ট ‘বাংলাদেশ টাইগার ইন দ্য নাইট’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছে, ৩০ বছরে বাংলাদেশ পাল্টেছে অনেকখানি। বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে বাড়ছে প্রবৃদ্ধি, ঠিক চীনের মতো। অনেক সামাজিক সূচকের দিক দিয়ে বিশাল প্রতিবেশী ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। দেশটির উদীয়মান পোশাক শিল্প রপ্তানির দিক দিয়ে পিছিয়ে কেবল চীন থেকে। এ শিল্প এবং প্রায় এক কোটি প্রবাসী কর্মঠ শ্রমিকের পাঠানো টাকায় বাংলাদেশ গত ১০ বছরে একবার বাদে প্রতি বছর উদ্বৃত্ত ভোগ করেছে।
বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যার মূল কেন্দ্রবিন্দু গ্রামীণ জীবন। সেখানে নানা অনাচার মিথ্যা আর কপটতা আছে। আছে শোষণ। বহুকাল আগে আমাদের দেশের সমাজ বিষয়ে বলা হয়েছিল এখানে মাৎস্যন্যায় চলে। যার মানে সবাই মাছের মতো এক পানি এক জলাশয়ে বসবাস করে কিন্তু প্রয়োজনে বড় মাছ ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে। এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান। বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন এমনকি জুলাই বিপ্লবের মতো পরিবর্তন হলেও সমাজে এসব বিষয়ে উদাসীন। আমরা সবাই জানি শহর ও গ্রামকেন্দ্রিক উভয় সমাজে ধর্ম ন্যায় অন্যায় এসব চলে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত ইচ্ছা অনিচ্ছায়। এসব প্রাগৈতিহাসিক কাহিনি জাদুঘরে পাঠানোর কথা শুনলেও তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। অচিরে হবে তেমন কোনো আশাও দেখি না।
অথচ বাংলাদেশ মন খুলে সবুর করছে। বহুকাল থেকে তার স্বাধীনতা সম্মান আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলা রাজনীতি এসব দিকে তাকানোর সময় পায় না। তার নজর অন্যদিকে। টাকা-পয়সা কামানো বা টাকা পাচারের যে সংস্কৃতি সেটি বিগত ষোল বছর ধরে দেশকে সর্বশান্ত করার চেষ্টা করে গেছে।
সেই বাংলাদেশকে আমরা আমাদের মনের মতো করে সাজাতে হলে সব ভেদাভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অমীমংসিত সব বিষয়ে মতভেদ দূর করে যদি নিজেদের একক ও একমাত্র বাংলাদেশি পরিচয়ে সতেজ রাখা যায় তাহলেই তা সম্ভব।
মনে রাখা দরকার কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম আমরা?
সে কথা বলার আগে বলি আমরা বলতে এখানে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা দেখা প্রজন্মের কথা বলছি। আমাদের বালক বেলার শেষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। পুরো তারুণ্য আর যৌবনজুড়ে আমরা যে দেশ দেখেছি তার গায়ে অভাব আর অসচ্ছলতার চিহ্ন থাকলেও মায়া মমতার কমতি ছিল না কোথাও। আমরা জানতাম স্বাধীনতার ব্যপ্তি ও সীমাবদ্ধতা কতটা।
স্বাধীনতা মানে কি যার যা ইচ্ছে করতে পারা? তা হলে তো উগ্রতা সংকীর্ণতা বা দেশ বিরোধিতা করাও স্বাধীনতা। মূলত স্বাধীনতা একটি জাতির সুশৃঙ্খল জীবনও মুক্ত থাকার অধিকার। এমন একটি বাংলাদেশই চেয়েছিলাম আমরা।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি। এর মানে কী আসলে? সাধারণ দৃষ্টিতে মনে হতে পারে এ আর এমন কী? একটা পতাকাই তো। সে তো একজন শিশুও বহন করতে পারে। কিন্তু এর গুরুত্ব রবীন্দ্রনাথ পরাধীন ভারতবর্ষেও টের পেয়েছিলেন। পতাকা একটি প্রতীক। প্রতীক মানচিত্রও। আসল কাহিনি থাকে বুকের ভেতর। আমাদের স্বাধীনতার কাহিনি অনেক জোরালো আর বেদনার। আমি জানি না কেন এবং কী কারণে আমরা জাতি হিসেবে বিভেদকামী। তবে এই বয়সে এসে এটুকু বুঝি আমাদের বিভেদের কারণ রাজনীতি আর নেতৃত্ব। এই কথাগুলো এখন স্পষ্ট করে বলাও বিপজ্জনক। মধ্য পঞ্চাশে দাঁড়ানো একটি দেশ ও জাতির জন্য এটুকু জানা জরুরি যে, তার ঐক্যহীনতার শিকড় কোথায়?
মজার ব্যাপার এই বাংলাদেশ এবং তার মুক্তিযুদ্ধ আগাগোড়াই রাজনীতির সুবর্ণ ফসল। রাজনীতিই তখন আমাদের পথ দেখাত। আজ মানুষ যাদের ভয় পায় বা যাদের কথা বিশ্বাস করে না তারাই ছিলেন তখন মুক্তিদাতা। মানে রাজনৈতিক নেতাদের কথা বলছি। যারা তখন রাজনীতি করতেন তারা মেপে কথা বলতেন। কাজ করতেন অধিক।
পরবর্তীতে আমরা তা মানলাম না। আজকে আরেক সমস্যা। দুনিয়ার সব দেশ এখন এগোচ্ছে। আমরাও এগোচ্ছি। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি যখন ধাবমান তখন বাক-স্বাধীনতা ও ইতিহাস বিষয়ে কথা বলা বন্ধ হওয়ার পথে। এটা স্বাধীন কোনো জাতির জন্য ভালো হতে পারে না। অন্যদিকে বিরোধিতার চেহারাও ভয়াবহ। আমি আজকাল কোনো বিরোধিতা দেখি না, যা দেখি তার নাম অপপ্রচার আর কুৎসা। এটাও আমাদের সমাজ বিকৃতির ফসল। খেয়াল করবেন কোনো শুভ বিষয় বা ভালো কিছু আজকাল মানুষকে টানে না। সামাজিক মিডিয়া চালু হওয়ার পর সবকিছু চলে গেছে অপপ্রচারের দখলে। যারা এখন মাথার ওপর আছেন তাদের দেখলে করুণা হয়। করুণা এই কারণে, একটা সময় আমাদের সমাজ যখন অবরুদ্ধ, মানুষ কথা বলতে ভয় পেত বা সামাজিক জগৎ অন্ধকারে থাকত, তারা পথ দেখাতেন। এখন এরাই অন্ধ।
বাংলাদেশ আসলে কোন পথে যাবে বা কোনটি তার পথ? এই জিজ্ঞাসা স্বাভাবিক। তার চেয়েও জরুরি আমাদের অন্ধকারত্ব আর পরাধীনতার চিহ্নগুলো মুছে দেয়া।
আগামী দিনের বাংলাদেশ মূলত তারুণ্যের ওপর নির্ভরশীল। আমরা মানি বা না মানি বিজ্ঞান মানবিকতা আর বিশ্বাস এই তিন বিষয় হাত ধরাধরি করে না চললে আমরা এগোতে পারব না। আমি মনে করি আমাদের এসব বিষয় মাথায় রাখা দরকার। অভ্যন্তরীণ ঝগড়া ফ্যাসাদ আর অনৈক্য দূরীভূত করার বিষয় এখন জরুরি। এত বছর পরও যদি সবকিছু আইন করে কানুন বানিয়ে মানাতে হয় তাহলে সরকার পরিবর্তনের পর আবারো অন্ধকার গ্রাসী ইতিহাসের দুঃস্বপ্ন থেকেই যাবে। কে নিশ্চিত করবে, নতুন কোন জোট এসে আবার ইতিহাসের গায়ে আঁচড় কাটবে না? এবার তা হলে কী পরিমাণ ভয়াবহভাবে তা হতে পারে সেটাই বরং দুর্ভাবনার বিষয়।
শেষ কথাটা এই- আমাদের স্বাধীনতার জন্য শুধু দেশের মানুষজন লড়াই করেননি। জর্জ হ্যারিসন রবিশংকর থেকে অস্ট্রেলিয়ান মুক্তিযোদ্ধা ওডারল্যান্ডের মতো মানুষরা লড়েছিলেন। লড়েছিলেন ফ্রান্সের এক তরুণ বিমান হাইজ্যাককারী। নিজের জীবন বাজি রেখে এরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করেছিলেন। যে সব বাঙালি জান হাতে যুদ্ধ করেছিলেন যারা বীরাঙ্গনা হয়েছিলেন তাদের ত্যাগ আর বীরত্ব শুধু ইতিহাসে থাকলে আমরা টবে রাখা গাছের মতো শুকিয়ে মরব। আমাদের স্বাধীনতাও ধুঁকবে। আজ বাংলাদেশের ঝলমলে উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের সেই কথাটি ফের মনে রাখতে হবে। দেশ মানে ভূখণ্ড আমাদের। পতাকা আমাদের। সংগীতও আমাদের হয়েছে। এখন তা বহন করার শক্তি দরকার। মানুষই পারে তা করতে, তা করে দেখাতে। ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধ আর চব্বিশের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান ও আত্মবিশ্বাস থাকলে দেশ ও প্রবাসের বাংলাদেশিরাই পারে স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ ও চমৎকার করে তুলতে। এই পারাটাই হোক আমাদের সবার প্রতিজ্ঞা।