বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে পাঞ্জাবি ও টুপি পরা এক ব্যক্তি ভারতের জাতীয় পতাকা পা দিয়ে মাড়িয়ে দিচ্ছেন এমন একটি ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেই ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে বাংলাদেশে ধর্মীয় দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করছে একটি কুচক্রি মহল। যে ছবি নিয়ে ভারতের বিজেপি ও উগ্র হিন্দুরা বাংলাদেশকে নিয়ে চক্রান্তে মেতে উঠেছে সেই ছবিটি আসল নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেক বা তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমার স্ক্যানার। ৪ ডিসেম্বর ছড়িয়ে পড়া ছবিটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমার স্ক্যানার।

এতে বলা হয়, রিউমার স্ক্যানারের দলের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের জাতীয় পতাকা পায়ে মাড়ানোর ভাইরাল ছবিটি বাস্তব নয়; বরং এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। রিউমার স্ক্যানার ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ‘রিভার্স ইমেজ সার্চ’ ব্যবহার করে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও ছবিটি শুধু স্যোশাল মিডিয়ায় প্রচার হতে দেখা গেছে। তাহলে কে বা কারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের উদ্দেশ্য নিয়ে এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যমে ছড়িয়েছে তা খতিয়ে দেখতে কাজ করছে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানটি। 

 সাধারণত, এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি জাতীয় গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ছবিটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছে রিউমার স্ক্যানার। তাদের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিতে থাকা ব্যক্তির ডান পায়ের একটি আঙুল অস্বাভাবিকভাবে অর্ধেক দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তির পরনের পায়জামার একটি ভাঁজ এমনভাবে রয়েছে, যা দেখতে ধুতির মতো মনে হয়। বাংলাদেশের পতাকার লাল বৃত্তের কাপড়ের ভাঁজও স্বাভাবিক নয়। 

এ ছাড়া ছবির আলোর প্রতিফলন, ছায়া এবং ব্যক্তির চোখের অভিব্যক্তিতেও অসামঞ্জস্য লক্ষ করা গেছে। এ ধরনের অসামঞ্জস্য সাধারণত এআই দিয়ে তৈরি ছবির ক্ষেত্রে দেখা যায়। রিউমার স্ক্যানার এ ধরনের অসামঞ্জস্য লক্ষ করার পর ছবিটির বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট ব্যবহার করে। এসব ওয়েবসাইটের বিশ্লেষণে ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার পক্ষে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত নিশ্চিত ফলাফল পাওয়া গেছে।

রিউমার স্ক্যানারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ডিপফেক’ শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম ট্রুমিডিয়ার পর্যবেক্ষণও বলছে, আলোচিত ছবিতে ম্যানিপুলেশনের অর্থাৎ উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারসাজির উল্লেখযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। অর্থাৎ ছবিটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং ছবিটি বাস্তব নয়।