নেপালে তীব্র বিক্ষোভ, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন : নিহত ৩

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপস ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে হিমালয় কন্যা নামে পরিচিত দেশ নেপালে।
বিক্ষোভ দমন করতে রাজধানী কাঠমান্ডুতে সেনাবাহিজনী মোতায়েন করেছে সরকার।
পুলিশ ও সেনাবাহীর সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। সংঘাতে ইতোমধ্যে ৩ জন নিহতের সংবাদ পাওয়া গেছে।
গত সপ্তাহে নেপাল সরকার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সরকারের দাবি, সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন না করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের পদক্ষেপটি সুপ্রিম কোর্টের পুরনো এক আদেশের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে বিদেশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে স্থানীয়ভাবে নিবন্ধন, যোগাযোগ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।
তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও টিকটকে এখনও কিছু ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। এসব ভিডিওতে সাধারণ নেপালিদের দুঃসহ জীবনযাত্রার বিপরীতে রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনধারা তুলে ধরা হয়েছে, যা মানুষের ক্ষোভ আরো উসকে দিয়েছে এবং বিক্ষোভকে আরো তীব্র করেছে।
আরো পড়ুন : থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেন আনুতিন
এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, আমরা কোনো প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে নই, বরং আমরা আইন না মানা, অহংকার এবং দেশের মর্যাদাহানির বিরুদ্ধে।
তিনি অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নেপালের আইন মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা বলেছে, আমরা তোমাদের সংবিধান জানি না। চারজনের চাকরি গেলে যাবে, কিন্তু জাতীয় আত্মমর্যাদা আরো বড়।
রবিবার এক বিবৃতিতে সরকার জানায়, তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও চিন্তার স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং এসব অধিকারের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সমালোচকদের মতে, সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি ও স্বাধীন গণমাধ্যমকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে।
উল্লেখ্য, নেপাল পূর্বেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে অনলাইন প্রতারণা ও অর্থপাচারের অভিযোগে টেলিগ্রাম অ্যাপ নিষিদ্ধ করে সরকার। এর আগে টিকটকের ওপর নয় মাসব্যাপী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, যা গত বছরের আগস্টে প্রত্যাহার করা হয় প্ল্যাটফর্মটি স্থানীয় আইন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর।