তিন দশকের লুটের বিচার, নতুন সংবিধান চায় নেপালের তরুণরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৫ পিএম

বিক্ষোভকারীরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। ছবি : সংগৃহীত
নেপালে সহিংস বিক্ষোভের মুখে সরকারের পতনের পর বিস্তৃত সংস্কারের দাবি তুলেছে দেশটির জেনারেশন জি তরুণরা। এর মধ্যে রয়েছে, নতুন করে সংবিধান প্রণয়ন, সরাসরি নির্বাহী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং গত তিন দশকে রাজনৈতিকভাবে লুটপাট হওয়া সম্পদের তদন্ত।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর বিক্ষোভকারীরা রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি তুলেছেন। তারা শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পাশাপাশি রাজনীতিকদের অবৈধ সম্পদের হিসাব চাইছেন।
আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, বিক্ষোভে নিহত প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তাদের পরিবারকে সম্মান ও সহায়তা দিতে হবে। পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরণ, অভিবাসন কমানো এবং সামাজিক বৈষম্য নিরসনে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দাবি করেছেন।
আরো পড়ুন : ভারত বিরোধিতার কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর অভিযোগ কেপি শর্মা অলির
বিক্ষোভকারীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়, এটি গোটা প্রজন্ম ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য। শান্তি জরুরি, কিন্তু তা সম্ভব কেবল নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে।
তাদের প্রধান দাবিগুলো হলো:
- জনগণের আস্থা হারানো বর্তমান প্রতিনিধি পরিষদ ভেঙে দেওয়া। জনগণ, বিশেষজ্ঞ ও তরুণদের অংশগ্রহণে সংবিধান সংশোধন বা সম্পূর্ণ পুনর্লিখন।
- অন্তর্বর্তীকাল শেষে স্বাধীন, সুষ্ঠু ও সরাসরি জনঅংশগ্রহণের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন।
- সরাসরি নির্বাচিত নির্বাহী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা।
- গত তিন দশকের লুট হওয়া সম্পদের তদন্ত ও অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রীয়করণ।
- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ খাতে কাঠামোগত সংস্কার।
বুধবার ভোর থেকে সেনাবাহিনী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে মোতায়েন হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর আগের দিন সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী ওলি পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন।
তবে সরকারের পতনের পরও অস্থিরতা কমেনি। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনী দেশজুড়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং কাঠমান্ডু, ললিতপুর, ভক্তপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিধিনিষেধ আরোপ করে।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে জানিয়েছে, কিছু গোষ্ঠী বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে এবং সরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে।
এর আগে সোমবার জেনারেশন জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহির মুখে পড়তে হয়। এরপরই শত শত মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করলে ওলি পদত্যাগ করেন।