ভারত বিরোধিতার কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর অভিযোগ কেপি শর্মা অলির

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৮ এএম

নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। ছবি : সংগৃহীত
স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানানোয় প্রধানমন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে, এমন অভিযোগ করেছেন নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জেন-জির বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন অলি। এরপর গুঞ্জন ওঠে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে জানা গেছে, তিনি নেপালেই আছেন এবং বর্তমানে সেনাবাহিনীর শিবপুরি ব্যারাকে অবস্থান করছেন। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
বুধবার নিজের দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অলি দাবি করেন, ভারতবিরোধী অবস্থান নেওয়াই তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মূল কারণ। তিনি বলেন, যদি আমি লিপুলেখ অঞ্চল নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম এবং অযোধ্যা ও দেবতা রাম নিয়ে কথা না বলতাম তাহলে আমি হয়ত ক্ষমতায় থাকতাম। আমি ক্ষমতা হারিয়েছি কারণ অযোধ্যায় দেবতা রামের জন্ম হয়েছে এই দাবির বিরোধিতা করেছিলাম।
আরো পড়ুন : নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সন্ধান মিলেছে
লিপুলেখ নিয়ে ভারত-নেপালের দ্বন্দ্ব
ভারত ও নেপালের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে লিপুলেখ গিরিপথকে ঘিরে বিরোধ চলছে। এ বিতর্কের মূল হলো কালাপানি অঞ্চল। ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী কালী নদীর উৎপত্তিস্থল থেকেই দুই দেশের সীমান্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল।
নেপালের দাবি, কালী নদীর উৎস লিম্পিয়াধুড়া থেকে, যা লিপুলেখের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এ হিসেবে কালাপানি ও লিপুলেখ নেপালের ভূখণ্ড। অন্যদিকে, ভারতের দাবি নদীটির উৎস কালাপানি গ্রামের কাছে। ফলে অঞ্চলটিকে নিজেদের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অংশ বলে দাবি করে তারা।
অলির সরকার এ বিষয়ে কড়া অবস্থান নেয়। তিনি ঘোষণা দেন, মহাকালী নদীর পূর্ব দিকের লিম্পিয়াধুড়া, লিপুলেখ এবং কালাপানি নেপালের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর পর নেপাল ভারতকে ওই অঞ্চলে রাস্তা নির্মাণ ও বাণিজ্য বন্ধ করতে অনুরোধ করে। এমনকি চীনকেও জানায় এটি নেপালের ভূখণ্ড। তবে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ১৯৫৪ সাল থেকে তারা লিপুলেখ দিয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য করছে।
অযোধ্যা ও দেবতা রাম নিয়ে বিতর্ক
২০২০ সালের জুলাইয়ে অলি মন্তব্য করেছিলেন, দেবতা রাম ভারতের নয়, নেপালের সন্তান। তার দাবি ছিল, রামের অযোধ্যা আসলে নেপালের পূর্ব বীরগঞ্জে অবস্থিত এবং ভারত ভুয়া অযোধ্যা তৈরি করেছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ভারতে জন্ম নেওয়া রাম কীভাবে নেপালের জনকপুরের সীতাকে বিয়ে করেছিলেন? প্রাচীন আমলে দূরের স্থানে বিয়ের প্রচলন ছিল না। আশপাশের রাজ্যগুলোতেই বিবাহ হতো। এত দূর থেকে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না।
অলির এসব বক্তব্য ভারতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয় এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।