মহাশক্তিতে এগোচ্ছে হারিকেন বেরিল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম

উপকূল লন্ডভন্ড করে মহাশক্তিতে এগোচ্ছে হারিকেন বেরিল। ছবি : বিবিসি
আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট অতি বিপজ্জনক হারিকেন বেরিল ক্যারিবীয় অঞ্চলের উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার পর আরো শক্তিশালী হয়ে ক্যাটাগরি-পাঁচ মাত্রার ঝড়ে রূপ নিয়েছে। শক্তিশালী হারিকেন বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। বুধবারের মধ্যে এটি সেখানে আঘাত হানতে পারে। এই ঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, এটি জ্যামাইকার দিকে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। জ্যামাইকার সরকার দেশটিতে হারিকেন সতর্কতা জারি করেছে। অপরদিকে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র ও হাইতির দক্ষিণ উপকূলের কিছু অংশে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের সতর্কতা আগে থেকে কার্যকর রাখা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (১ জুলাই) স্থানীয় সময় দিকে বেলা ১১টার বেরিল ক্যারিবিয়ান সাগরের গ্রেনাডার ক্যারিয়াকউ দ্বীপে ঘণ্টায় ১৫০ মাইল বেগে আঘাত হানে। সেখানকার জনপদ লন্ডভন্ড করেছে ঝড়টি। চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হানলেও এটি এখন পাঁচ মাত্রায় রূপ নিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রবল বাতাসে বিদ্যুৎ খুঁটি, বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপকূলে থাকা জেলেদের অনেক নৌযান ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের উপকূলবর্তী এলাকায় সমুদ্রের পানি প্রবেশ করায় সড়ক তলিয়ে গেছে। এতে বার্বাডোস ও গ্রেনাডার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক পরিষেবা।
সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনের এনবিসি রেডিও বেকিয়া দ্বীপে একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। যদিও সিবিএস নিউজ স্বাধীনভাবে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে দেশটিতে বেরিলের ভয়াবহ তাণ্ডব নিশ্চিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্কুল, বাড়িঘর, ভবন ও কৃষিজমি। ঝড়টি এতই শক্তিশালী ছিল যে, অনেক পাকা ঘরের ছাদ ও গাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। উপড়ে ফেলেছে বিদ্যুতের খুঁটি।
আরো পড়ুন : দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছে হারিকেন বেরিল
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আটলান্টিক মৌসুমের প্রথম হারিকেন অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে শুরু করেছে। হারিকেনের বাতাস ঝড়ের কেন্দ্র থেকে ৪০ মাইল পর্যন্ত বাইরের দিকে প্রবাহিত হয়। এতে সরাসরি আঘাত না হানলেও পাশের দেশগুলোতে ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আটলান্টিক হারিকেন মৌসুমের শুরুতেই এই ধরনের শক্তিশালী ঝড় তৈরি হওয়া অত্যন্ত ব্যতিক্রম। আটলান্টিক হারিকেন মৌসুম জুনের শুরু থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলে। তবে ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) মে মাসের শেষের দিকে বলেছিল, এই বছরটি একটি ব্যতিক্রমী হারিকেনের মৌসুম হতে পারে, যার মধ্যে সাতটি ক্যাটাগরি-৩ বা তার বেশি ঝড় হবে। সংস্থাটি এ জন্যে প্রশান্ত মহাসাগরের লা নিনা প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হারিকেনসহ চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো ঘন ঘন ঘটছে এবং এসব আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠছে।