আগামী ফুটবল বিশ্বকাপ মাঠে গড়াতে এখনও প্রায় বছরখানেক বাকি। তবে টুর্নামেন্টকে ঘিরে দর্শক-সমর্থকদের উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে এখনই। টিকিটের জন্য প্রথম ধাপের লটারিতে বিপুল আবেদন। ফিফার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রথম ধাপেই টিকিট কেনার জন্য আবেদন করেছে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ।

ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা জানিয়েছে, টিকিট কেনার প্রথম প্রি-সেল ড্রতে আবেদনকারীদের বেশিরভাগই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ভিসা ক্রেডিট কার্ডধারীদের জন্য সীমিত এই প্রিসেল সময়সীমা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবেদন সংখ্যা প্রকাশ করে সংস্থাটি।

আয়োজক দেশগুলোর মধ্যে মেক্সিকো ও কানাডাও আবেদনকারীর দিক থেকে শীর্ষ তালিকায় ছিল। তবে দেশভিত্তিক সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনি ফিফা।

এই প্রি-সেল উইন্ডোতে কারা টিকিট কেনার সুযোগ পাবেন তা ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে জানানো হবে। নির্বাচিতরা ১ অক্টোবর থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকিট কিনতে পারবেন।

আরো পড়ুন : এশিয়া কাপের সুপার ফোরে কোন দল, কবে, কার মুখোমুখি

ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এক বিবৃতিতে বলেন, এটা শুধু অসাধারণ সংখ্যা নয়, বরং শক্তিশালী বার্তাও। ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ হবে সবচেয়ে বড়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও রোমাঞ্চকর আসর। তিন আয়োজক দেশ কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের ছোট-বড় সব দেশ থেকেই প্রমাণ মিলছে ফুটবলের প্রতি আবেগ মানুষকে একত্রিত করে।

টুর্নামেন্টের ১০৪টি ম্যাচের সবগুলোর টিকিট বিক্রির জন্য তালিকাভুক্ত করা হলেও, নির্ধারিত সময় পাওয়া মানেই টিকিট নিশ্চিত নয়। প্রতিটি ম্যাচের জন্য একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন, তবে পুরো আসরের জন্য সর্বোচ্চ ৪০টি টিকিট কেনার অনুমতি থাকবে।

দ্বিতীয় ধাপ, যেটি আগাম টিকিট ড্র নামে পরিচিত, শুরু হবে ২৭ অক্টোবর। এটি চলবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত। এরপর তৃতীয় ধাপ, র‌্যান্ডম সিলেকশন ড্র, শুরু হবে ৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত সূচি ঘোষণার পর। এছাড়া টুর্নামেন্ট ঘনিয়ে এলে টিকিট আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বিক্রি হবে।

এছাড়া ২ অক্টোবর থেকে একটি অফিসিয়াল রিসেল প্ল্যাটফর্ম চালু করবে ফিফা।

২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে উত্তর আমেরিকার ১৬টি শহরে। নিউইয়র্ক সিটি থেকে অল্প দূরের নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে হবে আটটি ম্যাচ, যার মধ্যে ফাইনালও রয়েছে।

টিকিটের প্রাথমিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে গ্রুপ পর্বের ম্যাচের জন্য ৬০ ডলার থেকে শুরু করে ফাইনালের জন্য সর্বোচ্চ ৬,৭৩০ ডলার পর্যন্ত। তবে প্রথমবারের মতো ডায়নামিক প্রাইসিং চালু হওয়ায় এই মূল্য পরিবর্তিত হতে পারে। তুলনায়, ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে টিকিট ছিল ২৫ থেকে ৪৭৫ ডলার এবং কাতার বিশ্বকাপ ২০২২-এ ৬৯ থেকে ১,৬০৭ ডলার পর্যন্ত।

চলতি বছরের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপেও ডায়নামিক প্রাইসিং ব্যবহৃত হয়েছিল। সে সময় মেটলাইফ স্টেডিয়ামে চেলসি বনাম ফ্লুমিনেন্স সেমিফাইনালের টিকিট ৪৭৩.৯০ ডলার থেকে নেমে আসে মাত্র ১৩.৪০ ডলারে।

আবেদনের দিক থেকে শীর্ষ তালিকায় ছিল জার্মানি, ইংল্যান্ড, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, স্পেন এবং ইতালিও। ফিফা জানিয়েছে, বিশ্বের মোট ২১৬টি দেশ ও অঞ্চল থেকে ভক্তরা এই প্রি-সেল ড্রতে আবেদন করেছে।