হিজাব নিষিদ্ধ করল তাজিকিস্তান, ঈদের ছুটি বাতিল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ১০:৫৫ এএম

হিজাব নিষিদ্ধ বিল পাস করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আইনসভা। ছবি : সংগৃহীত
হিজাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিল পাস করেছে মধ্য এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যতম অঙ্গরাজ্য তাজিকিস্তান। দেশটির সর্বোচ্চ আইনসভায় এ সংক্রান্ত একটি আইনও পাস হয়েছে।
এতে পোশাকসহ অন্যান্য নিয়মও যুক্ত করা হয়েছে, যার কারণে উৎসবের পোশাকেও আসছে বিধি-নিষেধ। নারীদের হিজাব নিষিদ্ধের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দুই ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহায় স্কুল-কলেজ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাতিলের বিষয়টিও রয়েছে বিলটিতে।
বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ মজলিশি মিলিতে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটে বিলটি পাস হয়। এর আগে গত ৮ মে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ মজলিশি নামোইয়ানদাগনে পাস হয়েছিল বিলটি।
পার্লামেন্টের বিলটি পাসের পর এক মজলিশি মিলির প্রেস সেন্টার থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হিজাব বা এই জাতীয় মস্তকাবরণর পরিধানের সংস্কৃতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি হয়েছে। এটি তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতি নয়। তা ছাড়া এই পোশাকটির সঙ্গে কট্টরপন্থার সম্পর্ক রয়েছে।
আরো পড়ুন : ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পর্যটককে পিটিয়ে হত্যা
তাজিকিস্তানের জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশ মুসলিম। হিজাবকে ‘বিজাতীয় পোশাক’ অভিহিত করে দেশটির সরকার এটি নিষিদ্ধ করেছে। এই আইন ভঙ্গকারীদের জন্য ৬৫ হাজার তাজিক সোমনি জরিমানার বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যা ৫ লক্ষাধিক। হিজাবের পাশাপাশি দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমন ঈদের দিনের ‘ঈদি’ প্রথার ওপরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
২০০৭ সাল থেকে হিজাব, ইসলামি ও পশ্চিমা পোশাকের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান শুরু হয় তাজিকিস্তানে। ওই বছর তাজিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামিক পোশাক এবং পশ্চিমা ধাঁচের মিনিস্কার্ট উভয়ই নিষিদ্ধ করে। পরে সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে এটি কার্যকর করা হয়। এর পরের বছরগুলোতে হিজাবের ওপর একপ্রকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা কাজ করছিল দেশটিতে। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি পর্যন্ত করেছিলেন।
মূলত তাজিকিস্তানের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পোষাকরীতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে তাজিকিস্তানের জাতীয় দিবসে সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির নারীদের মোবাইলে হিজাব এবং পশ্চিমা পোশাক পরিহার করে তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরার আহ্বানও জানানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সরকারিভাবে হিজাব নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সবে নেয়া হলেও বহু বছর ধরেই তাজিকিস্তানে হিজাব নিষিদ্ধ। তবে তাতে কোনো আইন ছিল না। দেশটিতে বড় দাড়ি রাখাও সেদেশে কার্যত নিষিদ্ধ। ২০০৭ সালে তাজিক সরকার ইসলামিক ও মিনিস্কার্টের মতো পশ্চিমা পোশাক শিক্ষার্থীদের জন্য নিষিদ্ধ করে।
নতুন আইনে জাতীয় পোশাক পরার উপরেই জোর দিয়েছে তাজিকিস্তান। নারীদের জাতীয় পোশাক পরার আর্জি জানিয়ে বার্তা পাঠাবে সরকার। ২০০৯ সাল থেকেই সেদেশের সরকারি ধর্ম ইসলাম। তবে, এরই পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মপালনের পূর্ণ স্বাধীনতাও দিয়েছে তাজিক প্রশাসন।
সূত্র: এপিবি লাইভ