আজ পবিত্র আশুরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৬ এএম

ছবি: সংগৃহীত
আজ ১০ মহররম, মুসলিম উম্মাহর কাছে শোক, ত্যাগ ও প্রতিবাদের গৌরবময় স্মৃতিতে জড়ানো পবিত্র আশুরা। দিনটি গভীর শোক ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয় বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে। এ দিনেই ইতিহাসের করুণতম অধ্যায় কারবালার প্রান্তরে হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ও তার পরিবারের নির্মম শাহাদাত সংঘটিত হয়।
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.) ও তার সঙ্গীরা যে আত্মত্যাগের ইতিহাস রচনা করেছিলেন, তা আজও মানবতার পক্ষে এক অবিনাশী অনুপ্রেরণা। তারা অন্যায়, জুলুম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে আত্মদানের চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বাংলাদেশে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, দোয়া-মাহফিল ও তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। তবে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়েছে কঠোর প্রস্তুতি।
ঢাকা মহানগরীতে তাজিয়া মিছিলের সময় বিপজ্জনক বস্তু বহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ২ জুলাই জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিছিলে দা, ছোরা, তলোয়ার, বল্লম, লাঠি বা যেকোনো ধরনের অস্ত্র বহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সরওয়ার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই নিষেধাজ্ঞা ডিএমপি অধ্যাদেশ, ১৯৭৬-এর ২৮ ও ২৯ ধারা অনুযায়ী জারি করা হয়েছে এবং তা মিছিল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
আশুরার পবিত্র দিনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেন, "কারবালার আত্মত্যাগ ন্যায়-ইনসাফের জন্য সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত।" তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী শাসন, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে চলমান সংগ্রামে আশুরার চেতনা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
একই উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। আশুরা আমাদের চেতনায় শক্তি ও সাহস যোগায়, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল থাকার প্রেরণা দেয়।"
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণেও আশুরা একটি ফজিলতপূর্ণ দিন। বিভিন্ন হাদিসে আশুরার দিনে রোজা রাখার গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (সা.) নিজেও আশুরার রোজা রাখতেন এবং সাহাবিদের তা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই দিনটিতে মুসলমানরা ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং দান-খয়রাতের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি ও কারবালার আদর্শকে স্মরণ করে থাকেন।
বাংলাদেশে শিয়া সম্প্রদায় আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল, মাতম ও নানা ধর্মীয় আচার পালন করে। অপরদিকে সুন্নি মুসলমানরা দিনটিকে আত্মশুদ্ধি ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে, পালন করে রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে।