হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা বিবিসি আই উন্মোচন করেছে: প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিবিসির ইনভেস্টিগেশনস ইউনিট বিবিসি আই তার অনুসন্ধানে নিশ্চিত করেছে যে জুলাই আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। বুধবার (৯ জুলাই) শেখ হাসিনা নিজে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন, বিবিসির অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে আসার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কথা বলেন তিনি।
স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম লেখেন, যখন একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান যেমন বিবিসি বাংলাদেশের অপরাধ উন্মোচনে তাদের পুরো অনুসন্ধানী সক্ষমতা কাজে লাগায়, তখন বিশ্বকে অবশ্যই তা গুরুত্ব সহকারে আমলে নিতে হয়। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত অনুসন্ধানে যে অডিও প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, তা ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভ দমন অভিযানে শেখ হাসিনার ভূমিকার ‘চূড়ান্ত সত্য’ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে— এটি এক বিষয়; কিন্তু বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত, সম্পদসমৃদ্ধ ও ফরেনসিক দক্ষতায় পারদর্শী বিবিসির মতো একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যখন স্বাধীনভাবে তদন্ত করে এসব অভিযোগ অকাট্যভাবে তুলে ধরে, তখন তা ভিন্ন মাত্রা পায়। ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং, যা বিশ্বমানের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যাচাই করেছেন, প্রমাণ করে যে এ সহিংসতা তাৎক্ষণিক বা দুর্ঘটনাবশত ছিল না। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড।
প্রেস সচিব লেখেন, এখন আর প্রমাণ শুধু গল্পনির্ভর বা পক্ষপাতদুষ্ট নয়। এটি ফরেনসিক, যাচাইযোগ্য এবং উপেক্ষা করার মতো নয়। আমরা এখন ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা বিবেক ও নৈতিকতার স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে। অনেক দিন ধরে ভারত বাংলাদেশের বৈধ অনুরোধ সত্ত্বেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। এখন আর সেই অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়। এখন আর ভারত এমন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে এমন একজন ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পারে না।
শফিকুল আলম লেখেন, এ অবস্থান আর গ্রহণযোগ্য নয়। আঞ্চলিক বন্ধুত্ব, কৌশলগত হিসাব কিংবা কোনো রাজনৈতিক উত্তরাধিকার—কোনো কিছুই বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যার অজুহাত হতে পারে না। বাংলাদেশ ও ভারতের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুক্তরাজ্যের নিজস্ব গণমাধ্যম এই নৃশংসতাগুলো উন্মোচন করেছে। আমরা ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন এই মুহূর্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক সততার যৌথ মূল্যবোধকে সম্মান জানায়।
বাংলাদেশের জনগণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে উল্লেখ করে তিনি আরো লেখেন, ভিকটিমরা সান্ত্বনা পাওয়ার অধিকার রাখে। আর বিশ্ব দেখার অধিকার রাখে যে কোনো নেতা, যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে নয়।