রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো চার শিক্ষার্থী মারা গেছেন।

সর্বশেষ সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো চার শিক্ষার্থী মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও সায়ান ইউসুফ (১৪)। তাদের শরীরের ৮৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছিল।

এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাহেরীন চৌধুরী (৪০) ও আফনান (১৪) মৃত্যুবরণ করেছেন। রাত দেড়টার দিকে দগ্ধ অবস্থায় মারা যান মাইলস্টোন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সামিন (১৪)।

আরো পড়ুন : মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বার্ন ইনস্টিটিউটেই মৃত্যু হয়েছে নয়জনের।

এদিকে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সোমবার রাত দেড়টার দিকে দেওয়া সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২০। আইএসপিআরের রাত ৮টার বুলেটিনে বলা হয়েছিল, দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৭১ জন। তাদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সিএমএইচ-ঢাকা, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল ও উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন হাসপাতালে হতাহতদের বণ্টন নিচে দেওয়া হলো—

কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল: আহত ৮ জন, নিহত নেই

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট: আহত ৭০ জন, নিহত ২ (পরবর্তীতে বেড়ে ৯)

ঢাকা মেডিকেল: আহত ৩, নিহত ১

সিএমএইচ-ঢাকা: আহত ১৭, নিহত ১২

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: আহত ১, নিহত ২

লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টার, উত্তরা: আহত ১১, নিহত ২

উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল: আহত ৬০, নিহত ১

উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল: আহত ১, নিহত নেই

এ ঘটনায় এখনও জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটেই সবচেয়ে বেশি আহত ও আশঙ্কাজনক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে সেখানে ৪২ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বিভিন্ন ওয়ার্ড ও আইসিইউতে ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।

সোমবার দুপুর ১টার দিকে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে স্কুল ভবন ও বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। সেসময় স্কুল ভবনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল, যাদের অনেকেই হতাহত হয়েছেন।

ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট, বিজিবি ও সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে নামে। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে হতাহতদের দ্রুত বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।