অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি ফেরেনি: টিআইবি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০২:০৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
দেশের অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি এখনও ফিরে আসেনি বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার পরও দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, কর্মসংস্থান তেমন বাড়েনি, বিনিয়োগেও দেখা যাচ্ছে স্থবিরতা, এমন বাস্তব চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে টিআইবির সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
টিআইবি জানায়, কাঠামোগত চাপে রিজার্ভ কিছুটা বাড়লেও প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখনও সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য কমিশন গঠনের দাবি থাকলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। রাজস্ব ঘাটতি ও ঋণ খেলাপি পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। এমনকি কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। আমদানি শুল্ক, মূসক ও আয়করের তিন প্রধান খাতেই লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতা দেখা গেছে।
আরো পড়ুন : ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘাটতি গোপন করে অবৈধভাবে বিদেশ পালানোর অভিযোগ, মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার বাণিজ্য ও আদালতের ভেতরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ওপর হামলার মতো ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। আন্দোলনের পর বিভিন্ন থানায় হামলা, প্রতিশোধমূলক গ্রেপ্তার ও জামিন না মঞ্জুরের ঘটনাও ধরা পড়েছে।
এছাড়াও টিআইবির প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে- ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা ও হত্যায় ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা, শেখ হাসিনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাজ শুরু এবং কিছু আইন সংশোধনের অগ্রগতি হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে ৫০টি আইন পাস হলেও এর মধ্যে ১৩টি আইন ছিল শুধুই নাম পরিবর্তনের অধ্যাদেশ।
গুম সংক্রান্ত রিপোর্ট ও যাচাই-বাছাই শেষ হলেও বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আলামত নষ্টের অভিযোগ রয়ে গেছে।
বিচার সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ শুরুতে না থাকাকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ হিসেবে দেখিয়েছে টিআইবি। তবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলা হলেও মব জাস্টিস বা গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের ‘ক্ষুব্ধ মানুষকে প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে অভিহিত করাও আইনশৃঙ্খলার ঘাটতির ইঙ্গিত বহন করছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানুষকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে।