পাকিস্তানে পৃথক ৩ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২২

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পৃথক তিনটি সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেলুচিস্তানের কোয়েটায় এক রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলার সন্দেহে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১১ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সরকারি কর্মকর্তা হামজা শফাৎ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, সমাবেশ শেষ হওয়ার পর মানুষ বের হওয়ার সময় পার্কিং এলাকায় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় আরো অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
একই দিন বেলুচিস্তানের ওয়াশুক জেলায় জঙ্গিদের হামলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৯ সদস্য নিহত হন। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ডজনখানেক জঙ্গি একটি থানা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালায়। এর পরপরই সেনাবাহিনী পাল্টা ব্যাপক অভিযান চালায় এবং চার দিনে প্রায় ৫০ জন জঙ্গিকে হত্যা করে। তবে এ বিষয়ে সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গত ১০ আগস্ট রাতে ঝোব জেলার সামবাজা এলাকায় সেনারা অভিযানে তিন জঙ্গিকে হত্যা করে। তাদের দাবি, চার দিনে সেখানে মোট ৫০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। আইএসপিআর হামলাকারীদের ‘খাওয়ারিজ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, সশস্ত্র বাহিনী সীমান্ত রক্ষা ও শান্তি-স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নভেম্বরে টিটিপির সঙ্গে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে সহিংসতা বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বেড়েছে, অন্যদিকে টিটিপি মূলত খাইবার পাখতুনখোয়ায় নিরাপত্তা বাহিনী ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
আরো পড়ুন : পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৪৭ সন্ত্রাসী
এছাড়া পাকিস্তান অভিযোগ করছে, ভারত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে সহযোগিতা করছে এবং আফগানিস্তান তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিচ্ছে। তবে কাবুল ও নয়াদিল্লি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চলতি বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। টানা চার দিনের গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ড্রোন আক্রমণ ও যুদ্ধবিমান ব্যবহারে অন্তত ৭০ জন নিহত হয়। এর আগে কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর এক হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারান। ভারত ওই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে।
শেষ পর্যন্ত ১০ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, পারমাণবিক শক্তিধর ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা যে কোনো সময় আবারও বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে।