রাস্তার অভাবে অচল রায়গঞ্জের কোটি টাকার সেতু

রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৮ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের বেংনাই উত্তর পাড়া খালের ওপর নির্মিত একটি সেতু সংযোগ সড়ক না থাকায় দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। যথাযথ স্থানে সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এমন দশা সৃষ্টি হয়েছে।
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যুবলীগ নেতা তার সুবিধার্থে বাড়ির সামনে সরকারি অর্থে এ সেতু নির্মাণ করেন। প্রায় তিন কোটি টাকায় এ সেতু নির্মাণ হয়েছে। তবে এ সেতু ব্যবহার করতে পারবেন মাত্র পাঁচটি পরিবার। যেখানে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, জনগণের টাকায় নির্মিত অবকাঠামো এভাবে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহৃত হওয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের শামিল। দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি সচল করার পাশাপাশি দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি তাদের। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মূল সড়কের খালের ওপর জরাজীর্ণ একটি পুরনো ব্রিজ দিয়ে বহুদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কয়েক হাজার মানুষ। অথচ সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ না করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ উর রহমান জাহিদের বাড়ির সামনে ২৫০ মিটার পশ্চিমে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন সেতুটি। ফলে এটি ব্যবহার করতে পারছেন শুধু ওই এলাকার পাঁচ-ছয়টি পরিবার।
আরো পড়ুন : একনেকে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন
রায়গঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে বেংনাই উত্তর পাড়া খালের ওপর ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় তিন কোটি ২০ লাখ টাকা। কার্যাদেশ পায় পিসিএ এস জেভী নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালে কাজ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও এখন কাজের ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কার্যত অচল হয়ে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকাবাসীর সুবিধার্থে মূল সড়কের সাথে যুক্ত করে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হতো। কিন্তু সেটি না করে ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করায় সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে। বেংনাই গ্রামের আয়নাল শেখ, বয়াত আলী, মুনছুর আলীসহ অনেকে বলেন, প্রকৃত স্থানে ব্রিজ হলে অন্তত কয়েকটি গ্রামের মানুষ উপকৃত হতো। এখন এটা শুধু একটি পরিবারের রাস্তা। এত টাকা খরচ করে এমন ব্রিজ করার মানে নেই।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা রয়েছে। এলাকাবাসী জমি দিলে সংযোগ সড়ক তৈরি করে সেতুটি সচল করা সম্ভব।
এদিকে ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।