বয়স শুধুই সংখ্যা
৮২ বছর বয়সেও দাবা বোর্ডে রাণী হামিদের জয়জয়কার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম

বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক দাবা মাস্টার রাণী হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
যে বয়সে অনেকেই অবসর কাটানোর কথা ভাবেন, সেই বয়সে দাবার বোর্ডে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করে যাচ্ছেন রাণী হামিদ। বাংলাদেশি এই কিংবদন্তি দাবাড়ু ৮২ বছর বয়সেও আন্তর্জাতিক দাবা অঙ্গনে নিজের অটুট প্রতিভার প্রমাণ দিচ্ছেন। হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে তিনি সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তৃতীয় রাউন্ডে বার্বাডোজের স্প্রিংগার লেশিকে হারিয়ে জয়লাভ করেছেন।
রাণী হামিদের এই অর্জন শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং এটি বাংলাদেশের দাবা অঙ্গনের জন্য এক গৌরবজনক মুহূর্ত। বয়স যেন তার কাছে শুধুমাত্র একটি সংখ্যা। তিনি প্রমাণ করেছেন যে ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বয়সের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করা সম্ভব।
দাবা অলিম্পিয়াডের প্রথম দুই রাউন্ডে তিনি রিজার্ভ হিসেবে ছিলেন এবং খেলেননি। তবে তৃতীয় রাউন্ডে ওয়ালিজা আহমেদের পরিবর্তে খেলার সুযোগ পান এবং প্রতিপক্ষকে হারিয়ে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দেন। রাণী হামিদ ছাড়াও তৃতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশি নারী দাবাড়ু ওয়াদিফা এবং নোশিন আনজুমও জয়লাভ করেছেন।
তরুণ দাবাড়ুরা রাণী হামিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন
রাণী হামিদের অনুপ্রেরণায় তরুণ দাবাড়ুরাও দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন। ছেলেদের ওপেন বিভাগে তৃতীয় রাউন্ডে জয় পেয়েছেন প্রয়াত গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়া। তাহসিনও প্রথম দুই রাউন্ডে রিজার্ভ ছিলেন, কিন্তু তৃতীয় রাউন্ডে গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের পরিবর্তে খেলে জয়লাভ করেন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান এবং গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবও জয় পেয়েছেন। তবে ফিদে মাস্টার মনন রেজা নীড় তার ম্যাচটি ড্র করেন।
রাণী হামিদের অনন্য অবদান
বাংলাদেশে দাবা খেলার প্রসারে রাণী হামিদের অবদান অনস্বীকার্য। দাবার জগতে তিনি শুধু একজন সফল খেলোয়াড়ই নন, বরং একজন পথপ্রদর্শকও বটে। ১৯৮৫ সালে তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার উপাধি লাভ করেন, যা তাকে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক দাবা মাস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। কমনওয়েলথ এবং চেজ গিনিস রেকর্ড বুকে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দাবার খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ।
আরো পড়ুন: আয়ারল্যান্ডের প্রাচীন শহরের নবজাগরণ
রাণী হামিদের এই অব্যাহত সাফল্য শুধু বাংলাদেশের দাবা জগতের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এক উদাহরণ হয়ে থাকবে। বয়সের তোয়াক্কা না করে নিজের প্রজ্ঞা ও দক্ষতা দিয়ে তিনি আবারো প্রমাণ করেছেন, সাফল্যের জন্য বয়স কোনো বাধা নয়।