পাকিস্তানকে ধবলধোলাইয়ের সুযোগ হাতছাড়া করলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
এত কাছে এসেও হোয়াইটওয়াশের সুবর্ণ সুযোগটা হাতছাড়া করলো বাংলাদেশ। পাকিস্তানের কাছে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭৪ রানে হেরেছে তারা। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও সফরকারীদের ধবলধোলাই করতে পারেনি টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমেছিল পাকিস্তান। দলের দুই ওপেনার সাইম আইয়ুব এবং সাহিবজাদা ফারহানের ব্যাটে চড়ে উড়ন্ত সূচনা পায় মেন ইন গ্রিনরা। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে টাইগার বোলারদের তুলোধুনো করেছেন দুজন। তাদের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লের ফায়দাটা সুদে-আসলে লুটেছে দল। ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তোলে পাকিস্তান।
পাওয়ার প্লে শেষেও চলেছে দুই ওপেনারের ঝড়ো ব্যাটিং। তাদের ব্যাটিং তাণ্ডবে দলের বোর্ডে রান উঠেছে দ্রুত গতিতে। বেশি মারমুখি ছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। ওপেনিং জুটি থেকে এসেছে ৮২ রান। ফারহান তুলে ফেলেন ফিফটি। ১৫ বলে ২১ রান করে বিদায় নেন সাইম।
আরেক ওপেনার ফারহান দলের ৯৩ রানের মাথাতে ৪১ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন। দুজনকেই ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন নাসুম আহমেদ। দুই ওপেনার যতটা মারমুখি ছিলেন তিনে নামা মোহাম্মদ হারিস যেন ততটাই ধীরে চলো নীতিতে এগিয়েছেন। ১৪ বলে ৫ রান করা হারিসকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। এরপর চারে নেমে ঝড়ো ব্যাটিং চালিয়েছেন হাসান নওয়াজ। তবে অত বেশি লম্বা হয়নি তার ইনিংস। ১৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলা নওয়াজ ফিরেছেন সাজঘরে দলের ১৩১ রানের মাথায়। তাকে আউট করেন শরিফুল ইসলাম।
শুরুর টর্নেডোর পর দারুণ প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন টাইগার বোলাররা। একের পর এক উইকেট তুলে পাকিস্তানের রানের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। শেষ দিকে পাকিস্তানের হয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন সালমান আলী আঘা এবং মোহাম্মদ নওয়াজ। ১৬ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলেছেন নওয়াজ। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রানের পুঁজি দাঁড় করায় পাকিস্তান। ৯ বলে ১২ রান করে টিকে ছিলেন সালমান। ২ বলে ৪ রান করেন ফাহিম আশরাফ। ৩ বলে ১ রান করে অপরাজিত ছিলেন আব্বাস আফ্রিদি। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট তোলেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়া মাত্র ২২ রান খরচায় ২ উইকেট নেন নাসুম আহমেদ। ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন শরিফুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
জবাব দিতে নেমে দলের বোর্ডে রান ওঠার আগেই উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২ বল খেলে ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে গেছেন তানজিদ হাসান তামিম। তিনে নেমে অধিনায়ক লিটন দাসও সুবিধা করতে পারেননি। ৮ বলে ৮ রান করে দলের ১০ রানের মাথাতে বিদায় নেন লিটন। তাকে ফেরান ফাহিম আশরাফ। এরপর একের পর এক উইকেট হারিয়েই গেছে বাংলাদেশ। ৮ বলে ৯ রান করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২ বলে ১ রান করেন জাকের আলী অনিক। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি শেখ মেহেদী হাসানও। ২ বল খেলে ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন মেহেদী। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে মাত্র ২৯ রান তোলে বাংলাদেশ, উইকেট হারিয়েছে ৫টি।
ব্যাটিং দুর্দশা পাওয়ারপ্লে শেষেও কাটেনি। ক্রিজে এসে থিতু হতে পারছিলেন না কেউই। ওপেনার নাঈম শেখ ধীর ব্যাটিংয়ে ১৭ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন। শামীম হোসেন পাটোয়ারী ৫ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন। শেষ দিকে কিছুটা লড়াই চালিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। টেইলএন্ডের বাকি ব্যাটাররাও চেষ্টা করেছেন। তবে গায়ের জোরে তো আর পাহাড় ঠেলা সম্ভব না। ম্যাচে হারের ব্যবধান কমলেও জয়ের দেখা আর পায়নি বাংলাদেশ। ১৩ বলে ৯ রান করেন নাসুম আহমেদ।
৬ বলে ৭ রান করেছেন তাসকিন আহমেদ। ৬ বলে ৭ রান করেন শরিফুল ইসলামও। শেষমেশ ১০৪ রানের মাথাতে থামে বাংলাদেশ। পাকিস্তান তুলে নেয় ৭৪ রানের বড় জয়। ৩৪ বলে ৩৫ রান করে টিকে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩৪ বলে ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন সাইফউদ্দিন। পাকিস্তানের হয়ে ৩ উইকেট নেন সালমান মির্জা। এই জয়ের ফলে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে পাকিস্তান। তবে সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত করে রেখেছিল বাংলাদেশ। ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে টাইগাররা।