ডায়াবেটিস রোগীরা কেন চোখের বাড়তি যত্ন নেবেন?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৮ এএম

ছবি : সংগৃহীত
ডায়াবেটিস শুধু রক্তে শর্করার মাত্রাই বাড়ায় না, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। চোখ তার মধ্যে অন্যতম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত চোখের পরীক্ষা না করালে ডায়াবেটিস রোগীদের রেটিনার গুরুতর ক্ষতি হতে পারে, যা থেকে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে এ রোগ শেষ পর্যন্ত অন্ধত্বের ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।
বৃদ্ধ বয়সে চোখে ঝাপসা দেখলেই অনেকেই ধরে নেন ছানি পড়েছে। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। রেটিনার ক্ষতি ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়। প্রাথমিক অবস্থায় রেটিনার রক্তবাহী সরু ধমনীগুলি দুর্বল হয়ে যায়, ফলে সেখানে ফ্লুইড জমতে শুরু করে। ধীরে ধীরে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় এবং রেটিনার সব অংশে ঠিকমতো অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। এর ফলেই চোখে রক্তক্ষরণ (ভিট্রিয়াস হেমারেজ) শুরু হয়, যা অন্ধত্বের আশঙ্কা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
- দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
- কাছে বা দূরের কিছু পড়তে বা দেখতে অসুবিধা
- রঙ ঠিকভাবে না দেখা
- হঠাৎ চোখে অন্ধকার দেখা বা কোনো অংশ অস্পষ্ট হওয়া
- চোখের সামনে পোকার মতো কিছু ঘুরতে দেখা বা হঠাৎ আলোর ঝলকানি অনুভব করা
কী করবেন?
এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই দেরি না করে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে ডাক্তাররা অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি বা চোখের স্ক্যানের মাধ্যমে রোগের অবস্থা নির্ণয় করেন। লেজার থেরাপি, চোখে ইনজেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হয়।
এছাড়া রক্তচাপ, রেনাল প্রোফাইল (ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন) এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখলে চোখের জটিলতা কম হয়। নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই প্রধান করণীয়। এর পাশাপাশি নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। সামান্য অবহেলা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে—সেই ঝুঁকি এড়াতে চোখের যত্নে সচেতন হোন।