পলাতক ১২ পুলিশ কর্মকর্তারা এখন কে কোথায়?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
আওয়ামী সরকারের পতনের পর পুলিশের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কাজে যোগদান না করে পলাতক রয়েছেন। এসব কর্মকর্তা পেশাদারিত্ব ভুলে অতি-উৎসাহী হয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, ক্রসফায়ারে হত্যা করা, রিমান্ডে নির্যাতন, গণগ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো, গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করতেন। এ কাজের জন্য তৎকালীন সরকার ব্যাচ ডিঙিয়ে পদোন্নতি দেওয়া, দুর্নীতি ও অপকর্মের জন্য কোনো ব্যবস্থা না নেওয়াসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের পুরস্কৃত করেছে।
১৮৬ জন কর্মকর্তা এখনও কাজে যোগ দেননি। এদের বিরুদ্ধে আগস্ট গণহত্যার একাধিক মামলা রয়েছে। সরকার তাদের কাজে যোগ দিতে বললেও তারা যোগ দেননি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের পলাতক হিসেবে গণ্য করলেও এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। বিএনপির সাবেক চিফ হুইফ জয়নুল আবেদীন ফারুকের ওপর হামলা চালানো ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ উরফে ডিবি হারুন এখন কানাডায় এবং ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ভারতে পালিয়েছে।
এ ছাড়া জঙ্গি নাটকের হোতা পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামও পালিয়েছে ভারতে। তিনি ভারত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট দিচ্ছেন।
ফ্যাসিবাদের এই ১২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হলেন সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, খন্দকার গোলাম ফারুক, শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম, র্যাবের ডিজি ব্যারিস্টার হারুন অর রশীদ, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ ও যশোরের সাবেক এসপি প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আলোচিত-সমালোচিত ১৮৬ জন পুলিশ কর্মকর্তার এখনও চাকরি রয়েছে। কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়া পুলিশ সদস্যদের বেতন স্থগিত থাকলেও হাজিরা খাতায় নামের পাশে অনুপস্থিত লেখা রয়েছে। সূত্র বলছে, ফ্যাসিবাদের পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার যখন আইজিপি ছিলেন তখন অনেক গুমের ঘটনা ঘটে। তার সময়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী গুম হন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগেই তিনি দেশ ছেড়ে পালান।
আরেক পুলিশ সদস্য বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে গুম ও অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনিও বিদেশে পালিয়েছেন। ডিএমপির সাবেক কমিশনার শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে বিরোধী দলের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। মাঠে থেকে তিনি গণহত্যায় উসকানি দিয়েছেন। তিনি ভারতে পালিয়েছেন।
২০০৯ সালের আওয়ামী সরকারে জঙ্গি কার্ড খেলানোর অন্যতম হোতা সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে। তার নামেও আগস্ট গণহত্যার ১১টি মামলা হয়েছে। ফ্যাসিবাদের অন্যতম পুলিশ কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম। জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় তিনি ডিএমপির ক্রাইম অ্যান্ড সেন্টারে বসে পুলিশকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় উসকানি দিয়েছেন।