নাইজেরিয়ার মসজিদে বোমা হামলা, নিহত ৭
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪২ এএম
ছবি : সংগৃহীত
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় জনাকীর্ণ একটি মসজিদে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বর্নো প্রদেশে সন্ধ্যার নামাজের সময় সংঘটিত এ হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৩৫ জন। পুলিশ মুখপাত্র নাহুম দাসো এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ হামলার দায় স্বীকার করেনি। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্নোর রাজধানী মাইদুগুরির গাম্বোরু মার্কেট এলাকার একটি মসজিদে সন্ধ্যার নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণটি ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিস্ফোরণের পরপরই ভয়াবহ পরিস্থিতির চিত্র দেখা গেছে। সেখানে মার্কেট এলাকায় ধুলা উড়তে দেখা যায় এবং আতঙ্কে মানুষজন এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করতে থাকে।
এ হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার না করলেও এর আগেও এ অঞ্চলে মসজিদ ও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় আত্মঘাতী হামলা ও আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
মাইদুগুরি শহরটি দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম এবং তাদের সহযোগী আইএস পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশের তৎপরতার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। বর্নো প্রদেশে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বোকো হারাম ২০০৯ সালে সশস্ত্র অভিযান শুরু করে। নিরাপত্তা জোরদার থাকলেও উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় এখনও বিচ্ছিন্নভাবে সহিংস হামলা অব্যাহত রয়েছে।
আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুলিশ মুখপাত্র নাহুম দাসো জানান, বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে শুরুতে সরকারিভাবে হতাহতদের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুনা ইউসুফ এএফপিকে জানান, অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে স্থানীয় মিলিশিয়া নেতা বাবাকুরা কলো নিহতের সংখ্যা সাত বলে উল্লেখ করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুসা ইউশাউ বলেন, তিনি বহু আহত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নিতে দেখেছেন।
বিস্ফোরণের সুনির্দিষ্ট কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যে শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেটি প্রায় দুই দশক ধরে বোকো হারাম ও আইএস–সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে চলমান এ সংঘাতে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনেও।
সম্প্রতি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় আবারও সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ সামরিক অভিযানের পরও এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রাণঘাতী হামলা চালানোর সক্ষমতা ধরে রেখেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
একসময় মাইদুগুরি শহরে প্রতিদিন রাতেই গোলাগুলি ও বোমা হামলার খবর পাওয়া যেত। গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত থাকলেও ২০২১ সালের পর এটিই শহরটিতে সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
