নারী শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবিতে মানিকগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তনুশ্রী রায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন শেষে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা তনুশ্রী রায় হত্যায় সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শেষে একটি স্মারকলিপি পুলিশ সুপারের কাছে পেশ করেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে বিয়ের তিন মাসের মাথায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের গালমন্দ ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তনুশ্রী রায় (২১) ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেন।
নিহতের পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকে মানসিক নির্যাতন করে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের বনগ্রাম এলাকায় স্বামীর বাসভবন এবি ভিলা থেকে তনুশ্রীর মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা-পুলিশ।
মানিকগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চৈল্লা গ্রামের দীনবন্ধু রায়ের ছোট মেয়ে তনুশ্রী রায়ের সঙ্গে পৌর এলাকার বনগ্রাম এলাকার অটল বিশ্বাসের ছেলে অতনু বিশ্বাসের (৩০) গত বছরের ৩ অক্টোবর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা বিষয় নিয়ে তনুশ্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজসহ প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতন চালাত তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা দীনবন্ধু রায় বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই মামলায় নিহতের স্বামী অতনু বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে।
তনুশ্রীর বাবা দীনবন্ধু রায় জানান, তনুশ্রীকে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করত। তাকে ও তার মাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ বিষয়টি মাঝেমধ্যেই জানাতো সে। তখন তারা তাকে ধৈর্য ধারণ করতে বলতেন। সর্বশেষ তার মেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্বামীর বাড়িতে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নেন। মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আমানুল্লাহ জানান, নিহতের বাবা বাদী হয়ে নিহতের স্বামী অতনু বিশ্বাস, শ্বশুর অটল বিশ্বাস ও শাশুড়ী আরতী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা করার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। ইতোমধ্যেই নিহতের স্বামী অতনু বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।