জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সপ্তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (২৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।

এর আগে, ২০ আগস্ট ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্য-জেরা শেষ হয়। ওইদিন দু’জন চিকিৎসকসহ চারজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেন। তারা হলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না এবং শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।

আরো পড়ুন : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালের ২৬ মামলায় চার্জশিট

গত ১৮ আগস্ট পঞ্চম দিনের সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির হন শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল এবং রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন। তাদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। তবে তিনি নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

এর আগে, ১৭ আগস্ট সাক্ষ্য দেন সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম। ৬ আগস্ট প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক। ৪ আগস্ট জবানবন্দি দেন আন্দোলনে পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান এবং চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন। এরও আগে ৩ আগস্ট মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে হাজির হন আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।

১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

এই মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের নথি মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায়। সাক্ষী তালিকায় আছেন মোট ৮১ জন। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয়।